ব্রোকলি চাষে সফল কুমিল্লার মুরাদনগরের সামসুল

কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রথমবারের মতো ব্রোকলি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক সামসুল হক। ৫৫ শতাংশ জমিতে এ সবজি চাষ করে প্রথমে চিন্তিত থাকলেও এখন বাজারে এ সবজির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বেশ খুশি সে। এছাড়া স্কোয়াশ, রকমেলন, হলুদ তরমুজ ও সাম্মাম চাষ করেও সফল হয়েছেন সামসুল।

সরেজমিন দেখা যায়, জমিতে প্রায় সব গাছেই ব্রোকলি এসেছে। ব্রোকলির আকার দেখতে ফুলকপির মতো হলেও পাতা ও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে গাঢ় সবুজ। চাষ পদ্ধতিও ফুলকপির মতোই। বিভিন্ন রকমের সবজি চাষি সামসুল হক উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৫৫ শতাংশ জমিতে ব্রোকলি চাষ করেছেন। চারা, লেবার ও সেচসহ এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে কৃষক সামসুল বাজারে ৪০ হাজার টাকার ব্রোকলি বিক্রি করেছেন।

যে ফলন হয়েছে তাতে খরচবাবদ প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ হবে বলে জানায় কৃষক সামসুল হক।

বাজারের ফুলকপির চাইতে ব্রোকলির চাহিদা ও দাম বেশি হওয়াতে আগামীতে জমি আরও বাড়িয়ে এ সবজি চাষ করবেন বলে জানান তিনি। ফুলকপি বা বাধাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস বিক্রি হলেও ব্রোকলি বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পিস।

কৃষক সামসুল হক বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ঝিঙ্গা, লাউ, মুলা, টমেটো, বাঁধাকপি ও ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আসছি। গত বছর স্কোয়াশ, হলুদ তরমুজ, রকমেলন, মরুর দেশের ফল সাম্মাম ও বারমাসি তরমুজ চাষ করেও ভালো সফলতা পেয়েছি। এবার উপজেলা কৃষি অফিসারের সঙ্গে আলাপকালে ব্রোকলির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পারি।

গবেষকরা ব্রোকলিকে বলছেন- আল্টিমেট ক্যান্সার ফুড। রোজ ব্রোকলি খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। ব্রোকলি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এসব বিষয় জানার পর ব্রেকলি চাষে আগ্রহী হই। চলতি মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ সংগ্রহ করে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বীজ বপণ করি। বীজ চারা গজানোর পর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মূল জমিতে চারা রোপণ করা হয়। ৭৫ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ব্রোকলিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। বাজারেও এ চাহিদা অনেক বেশি। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে ব্রোকলি ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। এই উপজেলায় প্রথমবারের মতো বারি ব্রোকলি-১ জাতের ব্রোকলি চাষ শুরু করা হয়েছে। কৃষক সামসুল হকের পরিশ্রমে ব্রোকলি চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। আশা করি কৃষক সামসুল হককে দেখে অন্য কৃষকরাও এ সবজি চাষে ঝুঁকবেন।