ভোলায় গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রী ও ভাগ্নিকে পুড়িয়ে হত্যা

ভোলায় গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আগুনে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা গেছে খাদিজা (৮) নামে এক শিশু।

শুক্রবার গভীর রাতে লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খারাকান্দি গ্রামে ঘরে সিদকেটে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

এ ঘটনা এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে অভিযোগের আঙ্গুল নিহতের স্বামীর দিকে।

এলাকাবাসী ও লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, নিহত গৃহবধূ সুরমার সাথে বোরহানউদ্দিনের দেউলা এলাকার রফিকের ৬ মাস আগে বিয়ে হয়। এটা ছিলো রফিকের তৃতীয় বিয়ে। এই বিয়ের পর লালমোহনের কর্তারহাট এলাকায় ঘর ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী বসবাস শুরু করে। কিন্তু রফিক তেমন কাজকর্ম করতো না। ফলে ঘরভাড়া ঠিকমতো পরিশোধ করতে পারতো না। এছাড়াও বিয়ের পর স্বামী রফিকের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তাদের সাথে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। এ নিয়ে বিচার শালিসও হয় বহুবার।

গত ১০ দিন আগে সুরমাকে রেখে তার স্বামী চলে যায়। তারপর সুরমা বড় বোন আংকুরা বেগমের বাড়িতে উঠে। ওই বাড়িতে শুক্রবার রাতে খাবার পর এক বিছানায় সুরমা ও তার বোন আংকুরা এবং আংকুরার মেয়ে খাদিজা ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তাদের মাটির ঘরের পেছন দিয়ে সিঁদ কেটে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় লেপ-তোষকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সুরমার মৃত্যু হয়।

তার বড় বোন আংকুরা (৩৮) ও বোনের মেয়ে খাদিজা (৮) মারাত্মক দগ্ধ হয়। তাদের আর্তচিৎকার শুনে এলাকাবাসী ঘরে ঢুকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

অগ্নিদগ্ধ আংকুরা বেগম বলেন, তার নিহত বোন সুরমার সাথে স্বামী রফিকের কিছুদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না। সেই ঘটনার জের ধরে রফিক এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সিভিল সার্জন রথীন্দ্র নাথ মজুমদার জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ আহত দু’জনকে রাতে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে সেখানে শিশু খাদিজার মৃত্যু হয়।

ভোলার পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে দুই জন এডিশনাল এসপির নেতেৃত্বে পুলিশের বেশ কয়েকটি দল অভিযান চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে বলেও জানান তিনি।