মহামারিতেও থেমে নেই ফ্রেন্ডশিপ স্কুলগুলোর পাঠদান!

কোভিড-১৯ বা করোনা মহামারিতে বড় ধরণের ক্ষতির শিকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা।২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকায় হুমকিতে শিশু-কিশোরদের লেখাপড়া। এমন অবস্থায় মহামারীকালে শিক্ষা ব্যবস্থা সচল রাখতে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’।কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মহামারি শুরুর পর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠদান অব্যাহত রেখেছে সংস্থাটি ।

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার প্রত্যন্ত চরে কোমলমতি শিশুদেরকে নিয়মিত পাঠদান করে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ ।ফ্রেন্ডশিপ শিক্ষা বিভাগপ্রধান ব্রিঃ জেঃ(অবঃ)ইলিয়াস ইফতেখার রসুল জানান, করোনাকালে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে সুবিধা বঞ্চিতপ্রায় ৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে কয়েকটি বিকল্প পন্থায় দেয়া হচ্ছে পাঠদান । এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ, ছোট ছোট দলে উঠোন শিক্ষা, বাড়ী বাড়ী গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের খোঁজ-খবর নেয়া, ইত্যাদি।

প্রত্যন্ত চরে ফ্রেন্ডশিপের ৪৩টি প্রাথমিক এবং ১৭টি মাধ্যমিক ফ্রেন্ডশিপ বিদ্যালয়ে চলছে এই পাঠদান। শিক্ষকদের পাঠদান সহজ করতে আয়োজন করা হচ্ছে অনলাইন প্রশিক্ষনের । সংস্থাটির শিক্ষা বিভাগ প্রধান জানান, করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় এমন উদ্যোগ নেয়ার ফলে বিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়া রোধ করা সম্ভব হয়েছে।বিশেষ করে উঠোন শিক্ষা এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়ার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে, যা করোনাকালে পাঠদানকে সহজ করেছে।

ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, করোনাকালে সুবিধা বঞ্চিত চরবাসীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ নজর দিয়েছে ফ্রেন্ডশিপ। তাই সংস্থার অধীনে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানে আনা হয়েছে নতুন মাত্রা। বিশেষ করে ফোন কলে যোগাযোগ, উঠোন শিক্ষা এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের খোঁজ-খবর নেয়ায়, সাধুবাদ জানিয়েছে অভিবাক, স্থানীয় সমাজ ও প্রশাসন। এ ধরণের সাধুবাদ এবং উৎসাহ, ফ্রেন্ডশিপের কাজে আরও গতি আনবে বলে আশা করেন তিনি।

উল্লেখ্য চরের শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন এ উদ্যোগ শুরু করা হয় ২০২০ সালের মার্চে লকডাউনকালেই। ছাত্র-ছাত্রীরা আগ্রহের সাথে অংশ নিচ্ছে উঠোন শিক্ষায়। চরের পাশাপাশি সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু উদ্যোগ আগে থেকেই চলমান ফ্রেন্ডশিপের। বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ফ্রেন্ডশিপের তত্বাবধানে ধারণ করা মাধ্যমিক শিক্ষার ভিডিও ক্লাসগুলো নিয়মিত আপলোড করা হচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ এডুকেশন ইউটিউব চ্যানেলে। ইউটিউব চ্যানেলটির লিংক সরকারী ওয়েব সাইট কিশোর বাতায়নের সাথেও সংযুক্ত আছে।

দেশের যেখানে জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে, সে সব প্রান্তিক এলাকার জনগোষ্ঠিকে স্বাবলম্বী করণ এবং স্থানীয় জনগনের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’।

২০০২ সালে যাত্রা শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবছর ৬০ লাখ মানুষকে সহযোগিতা করে আসছে সংস্থাটি । দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকার পাশাপাশি যেখানকার বাসিন্দারা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার এমন জনগোষ্ঠিকে স্বাবলম্বী করছে সংস্থাটি । এক্ষেত্রে দেশে এবং দেশের বাইরে সফলতার মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ফ্রেন্ডশিপ।