মাগুরার এএসপির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
যশোরের মণিরামপুর থানার সাবেক ওসি বর্তমানে মাগুরা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ছয়রুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে যশোরের একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর থানার গাবরডাঙ্গা গ্রামের মৃত অজিত ঘোষের ছেলে প্রভাষ চন্দ্র ঘোষ ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।
মামলার একমাত্র আসামি মণিরামপুর থানার ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদ। আদালত ওই বছরের ৩০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর সমন্বতি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
দুদকের তদন্তে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালত পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার পাঁচ একর জমিতে ইরি ধান চাষাবাদ করেন। এলাকার ৮জন ব্যক্তি বাদীর রোপনকৃত ইরিধান কেটে নেওয়ার জন্য দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর মণিরামপুর থানার ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদের কাছে শরনাপন্ন হন।
বাদীর সঙ্গে বিবাদকারীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই গাজী আবদুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মণিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০১১ সালের ৪ মে বাদীর ৫ বিঘা জমির ১৫০ মণ ধান কেটে মাড়াই করে থানায় নিয়ে আসেন। যার মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
ধান ও বিচালি থানায় নিয়ে মণিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদ নিজের জিম্মায় রাখেন। বাদী বারবার মণিরামপুর থানায় গিয়ে ধান ও বিচালি চাইলে তার কাছে ৫০ হাজার টাকার ঘুষ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে কোন দিন ধানের টাকা দেওয়া হবে না।
ধানের দাম চাইতে বার বার থানায় গেলে তাকে পেন্ডিং মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন পুলিশ কর্মকর্তা ছয়রুদ্দিন আহমেদ । ২০১১ সালের ৩০ আগস্ট বাদী মণিরামপুর থানায় গিয়ে বাদী ছয়রুদ্দিন আহমেদের কাছে গিয়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে অনুরোধ করেন তার জিম্মায় থাকা ধান ফেরত দেওয়ার জন্য। একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে বাদী মণিরামপুর থানায় গিয়ে আসামির কাছে ধান ফেরত চান। কিন্তু দাবি অনুযায়ী ৩০ হাজার টাকা না দিলে ধান ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
তখন বাদী ঘুষের ২০ হাজার টাকা ফেরত চান। মণিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদ বলেন, সেই টাকা হজম হয়ে গেছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ক্রসফায়ার ও কিলার দিয়ে হত্যা করারও হুমকি দেন আসামি।
গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে জানতে চাইলে মণিরামপুর থানার সাবেক ওসি ও বর্তমান মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার ছয়রুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র হাতে পাননি। বিষয়টি সম্পর্কেও তিনি অবহিত নন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন