মাদারীপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত

মাদারীপুর শহরের সৈদারবালী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি মসজিদসহ অন্তত পাঁচটি বসতঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। গুরুতর আহত তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩ জুন) সকাল ১০টা থেকে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের মধ্যে চার জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, সৈদারবালী এলাকার নাজিমউদ্দীন রহমানের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪১), মতিউর রহমান হাওলাদারের ছেলে মিনহাজুর রহমান (১৬), ২নং শকুনি এলাকার কাজী মাইনুদ্দিনের ছেলে আ. হাকিম (৫০), শামীম মুনশির ছেলে আসিফ মুনশি (১৩)। বাকিদের জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে পৌর এলাকার সৈদারবালী ও ২নং শকুনি এলাকার কিশোরদের মধ্যে। কিছুদিন আগে সৈদারবালী এলাকার সেকেন হাওলাদারের ছেলে রোমান হাওলাদার শকুনি এলাকায় গেলে সেই সময়ে সাগর মুনশি ও তার সহযোগীরা মারধর করে রোমানকে। ঘটনার কিছুদিন পরে শকুনি এলাকার তুষার হোসেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হলে তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালে শকুনি এলাকার সাগরের লোকজন হাসপাতালে তুষারকে দেখলে গেলে রোমানের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হলে এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাগর মুনশি ও রোমান হাওলাদারের সমর্থকরা সৈদারবালী এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে তিনজন টেঁটাবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন।

এসময় বেশকয়েকটি হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদসহ অন্তত পাঁচটি বসতঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

সৈদারবালী এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা সাথী বেগম বলেন, কিশোর ছেলেদের মধ্যে গুরুপিং নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। প্রথমেই হাজিরহাওলা এলাকার সৈকত, শামীম, তামিম, রায়হান, রাতুলসহ অনেক ছেলেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের সৈদারবালী এলাকায় ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আমাদের বাসার গ্লাস ভেঙে ফেলেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কাজী বলেন, সকালে বাসায় নাস্তা খাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি আমার বাসার সামনে রাকিব নামে একটি ছেলেকে কোপাচ্ছে কিছু ছেলেরা। পরে আমি ওকে গিয়ে বাচাই। পরে হামলাকারীরা আমার বাড়িসহ এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রিয়াদ মাহামুদ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ থেকে ৯ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। তাদের মধ্যে তিনজন টেঁটাবিদ্ধ। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি রয়েছে বেশ কয়েকজন। আহতদের প্রত্যেকের শরীরে দেশীয় অস্ত্রে গুরুতর জখম রয়েছে।

এ সম্পর্কে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমাদের পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।