মায়ের জন্য পাকাবাড়ি করে দিতে চেয়েছিল পাহাড়ধসে নিহত সৈনিক চঞ্চল

রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে পাহাড় ধসে নিহত বগুড়ার আদমদীঘির সেনা সদস্য শাহীন আলম ওরফে চঞ্চলের (৩২) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একমাত্র ছেলে শাহীনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মা-বাবা বোনসহ পরিবারের সবাই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে লাশ নিয়ে হেলিকপ্টার এখনো পৌঁছেনি।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামের নিহতের বাবা সরোয়ার্দী জানান, একমাত্র ছেলে শাহীন আলম ওরফে চঞ্চল ২০০৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সে ২০১২ সালে চমন বেগম নামের এক পুলিশ সদস্যকে বিয়ে করেন। তাদের আবু তাহা নামে ৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

নিহত শাহীনের স্ত্রী বর্তমানে ময়মনসিংহ র্যািবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার সকালে তার ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। সন্ধ্যার দিকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে তার ছেলে পাহাড় ধসে নিহত হয়েছে।

মা সেলিনা বেগম জানান, ৩ মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে আমার সংসার। ছেলেটি ছিল উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি। ‘ছেলের ইচ্ছা ছিল আমাকে একটি পাকা বাড়ি করে দিবে। আড়াই শতক জমি আমার সম্বল। ওই আড়াই শতকের উপর মাটির একটি ঘর করে বসবাস করছি।’

ধনতলা গ্রামের আছির উদ্দিনসহ কয়েকজন জানালেন, দিনমজুর সরোয়ার্দীর একমাত্র ভরসা ছিল তার ছেলে। ছেলেও বাবাকে দেখাশোনা করত। তার পরিবারের আরো ৩টি মেয়ে রয়েছে। তাদের বিয়ে হয়েছে। শাহীন খুব ভাল স্বভাবের ছিল। ছেলেকে নিয়ে প্রায়ই গর্ব করতো সরোয়ার্দী।

আদমদীঘি থানার ওসি শওকত কবির জানান, বুধবার নিহত সেনাসদস্যের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার আসতে পারেনি।