মিয়ানমারের চাল নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কথার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘মিয়ানমার তো বর্বর ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের কারণেই আজ রোহিঙ্গাদের মতো বোঝা আমাদের ঘাড়ে। আমরা সেখান থেকে চাল আনছি, এটা কেমন হয়’ অর্থমন্ত্রীর এ কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।

সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কথা জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, চাল-গম আমদানির বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ সময় মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রসঙ্গটি আসে। তখন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ওই কথা বলেন।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক চলছে। কিন্তু তাদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যও চলছে। আমরা কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমি যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ছিলাম তখন মিয়ানমার উসকানি দিয়েছে। আমরা তাতে কান দেইনি। আমরা বাড়াবাড়ি করলে হয়তো পরিস্থিতি অন্যরকম হত। তারা কয়েকবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। আমরা ধৈর্য ধরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়াবাড়ি বা ঝগড়া করে তো কোনো সমস্যার সমাধান করা যাবে না। ধৈর্যধারণ করে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। যদি আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে বাড়াবাড়ি করতাম, তাহলে বিশ্বজনমত আমাদের পক্ষে থাকত না। বিশ্বজনমত আমাদের পক্ষে আছে। আমরা কারও উসকানিতে পা দেব না। আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। কূটনৈতিক তৎপরতাও চলবে, মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও চলবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখা যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে সারাবিশ্ব আজ বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতাও জোরদার করতে হবে।

বৈঠক সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে খাদ্যের কোনো সমস্যা হবে না। প্রচুর চাল, গম আমদানি হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেসরকারিভাবে ১৯ লাখ টনের বেশি চাল-গম আমদানি হয়েছে। সরকারিভাবে ৭-৮ লাখ টন চাল-গম আমদানি হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টন চাল-গম আমদানি হবে। ফলে দেশে খাদ্য সঙ্কটের কোনো আশঙ্কা নেই।