যুক্তরাষ্ট্রের নিউয়র্ক জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশের নামে সড়ক উদ্বোধন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউয়র্ক বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত জ্যাকসন হাইটস ৩৭ এভিনিউ এর ২৩ স্ট্রিটের পুণ:নামকরণ অবশেষে আলোর মুখ দেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি প্রস্তাবে দীর্ঘদিন ধরে আটকা পড়েছিলো এই পুণ:নামকরণ প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগ এই সড়কের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং বিএনপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে পুণ: নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলো। পাল্টাপাল্টি এই প্রস্তাবের কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিপাকে পড়ে নিউয়র্ক সিটি কাউন্সিল। যে কারণে বিলম্বিত হয় পুণ:নামকরণের প্রক্রিয়া। সবশেষ স্থানীয় কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান এর প্রচেষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দিয়ে বাংলাদেশ স্ট্রিট নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন করে সিটি কাউন্সিল। রোববার কমিউনিটির প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে সেটি উদ্বোধন করেন শেখর।

এর আগে জামাইকা, ব্রংকস এবং ওজনপার্কে বাংলাদেশের নামে সড়কের নামকরণ হয়েছে। বাংলাদেশী অধ্যুসিত জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিনিউ এর ২৩ স্ট্রিটের নামও বাংলাদেশের নামে পুণ: নামকরণের জন্য সিটি কাউন্সিলের কমিটি অন পার্কসে প্রস্তাব করেন স্থানীয় কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা আলাদা আবেদনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে নামকরণের জন্য প্রস্তাব করেন। এতে দেখা দেয় বিপত্তি। দুপক্ষকে ঐক্যমতে পৌঁছাতে কাজ করেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত দল নিরপেক্ষ বাংলাদেশী সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এ ব্যাপারে এটর্নি মইন চৌধুরী টাইম টেলিভিশনকে জানান, দুই দলের প্রস্তাবে নিজেদের নেতাদের নাম থাকায় ‘বাংলাদেশ’ নামটি একটি কমন এবং সার্বজনীন নাম হিসেবে সিটি কাউন্সিল বিবেচনায় নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতি টেনে না আনাই ভালো। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ- বিএনপি সবার দেশ। ফলে দলের চেয়ে দেশের নামেই ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা সম্ভব, এবং সেটিই হয়েছে শেষ পর্যন্ত।

এদিকে, পুণ: নামকরণের প্রস্তাব সিটি কাউন্সিল অধিবেশনের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো এই বাংলাদেশ স্ট্রিট।

২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের নামে সড়কটির নামকরণ উদ্বোধন হওয়ায় আনন্দে মেতে ওঠেন নিউয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এটি নিউয়র্ক সিটি কাউন্সিলের এক অনন্য উপহার হিসেবেও মন্তব্য করেন অনেকে।

এদিকে, সড়কটির পুণ:নামকরণের অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীর উপস্থিতি রীতিমত এক উৎসবের আবহ তৈরি করে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস উইম্যান গ্রেসম্যাং, স্টেট সিনেটর মাইকেল জেনারেস, স্টেট এসেম্বলি উইম্যান জেসিকা গনজালেস রজাস, এসেম্বলি উইম্যান ক্যাটারিনা ক্রোজ, কাউন্সিল উইম্যান লিন্ডা, ডেমোক্রেটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নি মইন চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, নিউয়র্ক মেয়রের এশিয়ান এডভাইজারি কাউন্সিলের সদস্য ফাহাদ সুলায়মান, জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি গিয়াস আহমদ, হারুণ ভূঁইয়া, মাহবুবুর রহমান টুকু প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিলান রহমান।