রংপুরের পীরগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সানেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেছবাহুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিশ লক্ষাধিক টাকা তছরুপের অভিযোগে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ৩ নারী সদস্যসহ ১২ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিল করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে পৃথক ২টি সভা করে ইউপি সদস্যগন অনাস্থা প্রস্তাবে সিদ্ধান্ত নেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উন্নয়ন সহায়তা তহবিল হতে ফি ল্যান্সিং বাবদ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও সামান্য কিছু অর্থ ব্যয় করে অবশিষ্ট অর্থ তছরুপ করা হয়েছে, নির্বাচিত হবার পর থেকেই এডিপি’র বরাদ্দকৃত অর্থ কোন সদস্যকে না জানিয়ে নিজেই মনগড়া ব্যয় দেখিয়ে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে সম্পুর্ন অর্থ পকেটস্থ করেছেন।

ভুমি উন্নয়ন কর এর প্রাপ্ত শতকরা ১ ভাগ অর্থ উত্তোনর পৃর্বক তা ইউপি তহবিলে জমা না করেই ব্যয় দেখিয়ে পকেট ভারি করেছেন। জন্ম নিবন্ধন ফি’র অতিরিক্ত ২’শ টাকা হারে বাধ্যতামুলক আদায় করে তা ইউপি সচিবের সহযোগিতায় আত্নসাত করেছেন।

সানেরহাট ইউনিয়নের হরিরাম সাহাপুর গ্রামের রাস্তার ২৫/৩০ টি গাছ পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই তা কেটে তা বিক্রি করেছেন। ভিজিডি’র চাল পরিবহনের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হলেও উপকারভোগীদের কাছে বাধ্যতামুলক ২০ টাকা হারে আদায় করেন।

বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে জেলা প্রশাসন থেকে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটি বাবদ ১৫ হাজার টাকা ও নিবন্ধন বাবদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও তা কোন প্রকার সভা না করে ইউপি সচিবসহ ৩৫ হাজার তুলে পকেট ভারি করেন। বিগত ২০২১-২২ অর্থ বছরে টিআর কর্মসুচির ১ম পর্যায়ে কাউয়াপুকুর এতিমখানার জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলে কোন প্রকার কাজ না করে সম্পুর্ন টাকা আত্নসাত করেন।

২০২২-২৩ অর্থ বছরে টিআর ১ম পর্যায়ে ইউপি কার্যালয় সংলগ্ন মাদ্রাসার নামে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোন প্রকার কাজ না করে সম্পুর্ন আত্নসাত করেন।

ইউনিয়নে সেলাই মেশিন ও প্রশিক্ষন বাবদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে তা বেশির ভাগই আত্নসাত করেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় সোলার ষ্টিল লাইট মেরামত ও সংস্কার বাবদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে তা কোন প্রকার কাজ না করেই পকেটস্থ করেন।

এসব ছাড়াও কোন বরাদ্দের চিঠি কাউকে জানানো হয় না এবং পুর্বের রেজুলেশনে নতুন বরাদ্দ ও বরাদ্দের অংকের পরিমাণ কম বেশি করেন। উক্ত ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম চলায় ইউপি সদস্যগন সম্মিলিতভাবে ওই অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনায়ন করেন।

এ বিষয়ে সানেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান সেছবাহুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এগুলো সত্য নয়, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হাসান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।