রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন

রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে ৩দিন ধরে অনশন পালন করছেন অনার্স পড়ুয়া রিক্তা আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধু।

গত ১০ এপ্রিল’২০২১ ইং সন্ধ্যা থেকে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের জলাইডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিবাহ নিবন্ধন, গৃহবধু ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, জলাইডাঙ্গা গ্রামের মৃত- আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডলের পুত্র ৪ সন্তানের জনক শরিফুল ইসলাম পলাশ (৪৮) একই গ্রামের দিনমজুর অসহায় মনিরুজ্জামানের অনার্স পড়ুয়া কন্যা রিক্তা আক্তারকে নানাভাবে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে গত ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার ৪নং দিওড় ইউনিয়ন কাজী অফিসে ৬লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে রিক্তা আক্তার ও শরিফুল ইসলাম পলাশ বিয়ে করেন (রেজি: ভলিয়ম নং- ৩, পৃষ্ঠা নং- ৬, সন- ২০১৮ ইং)। বিয়ের কাবিন নামাতেও রয়েছে নানা অসঙ্গতি।

বিয়ের বিষয়টি রিক্তা আক্তারের পরিবার (বাবা-মা) জানলেও শরিফুল ইসলাম পলাশ তার পরিবারের কাউকে না জানানোর জন্য চাপ দেয়। এ সময় শরিফুল ইসলাম পলাশ স্ত্রী রিক্তাকে নতুন ঘর-বাড়ি তৈরী ও জমি নামে করে দেয়ার প্রতিশ্রæতিও দেন। প্রায় দু’বছর রিক্তা ও তার পরিবার বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখে। সম্প্রতি রিক্তা তার স্বামী পলাশকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তার নিজ বাড়িতে উঠানোর প্রস্তাব দিলে সে টালবাহনা করতে থাকে। এমন কি রিক্তার সঙ্গে পলাশ সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে রিক্তা আক্তার নিরুপায় হয়ে বিষয়টি গ্রামের লোকজনদের জানিয়ে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ১০ এপ্রিল’২০২১ ইং সন্ধ্যায় স্বামীর বাড়িতে গিয়ে অনশন পালন করছেন।

এদিকে রিক্তা আক্তারের উপস্থিতি টের পেয়ে শরিফুল ইসলাম পলাশ কৌশলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করছেন রিক্তা। মঙ্গলবার দুপুরে রিক্তা আক্তারের সঙ্গে কথা হলে বলেন, বিয়ের কথা গোপন রেখে আমার বাবার বাড়িতেই সে দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে আমার সঙ্গে সংসার করে আসছে। নতুন বাড়ি-ঘর করে দেয়া তো দুরের কথা সে এখন আমাকে তালাক দিবে বলে আমার ঘনিষ্টদেও জানিয়েছে। তাই আমি শরিফুল ইসলাম পলাশের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। স্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়া পর্যন্ত এ বাড়িতেই অনশন চালিয়ে যাব।

এ বিষয়ে শরিফুল ইসলাম পলাশের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাফিজার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দু’পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্টা চলছে।