রাতের আধারে কর্মহীন মানুষের পাশে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার ওসি

রাতের আঁধারে ত্রাণ নিয়ে হাজির সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামে অসহায় প্রতিবন্ধী এক নারী ছোট একটা জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করেন।

স্বামীহারা অসহায় এই নারী সন্তানের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে কাজ করতেন গ্রামে গ্রামে। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে সেই কাজও। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কাজ না করতে পারার সঙ্গে থমকে গেছে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্তানের মুখে কী তুলে দেবেন সেই চিন্তায় হয়ে গেছেন একপ্রকার দিশেহারা।

শুক্রবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে ঘড়ির কাটায় রাত তখন ১২টা ২০ মিনিট বাজে। হঠাৎ দরজায় কে যেন ঠক ঠক করল। খুলে দেখেন কয়েকজন ভদ্রলোক একটা শুকনো খাবারের পোটলা নিয়ে এসেছেন। পরিচয় জেনেই চোখ যেন কপালে উঠল ওই নারীর। তিনি কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা। ওই নারীর দুর্ভোগে পড়ার বিষয়টি জেনে খাবার নিয়ে ছুটে এসেছেন তিনি।

চোখ ছলছল করা কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ওই মুখে যেন কোনো কথাই বের হচ্ছিল না। শুধু মুখ বিড়বিড় করে কী যেন বলছিলেন।

শুধু ওই নারী না। শুক্রবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়ন, মৌতলা, মথুরেশপুর, নলতা সহ বেশ কয়েকটি স্থানের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কালিগঞ্জ থানার ওসি। এ নিয়ে গত তিনদিনে শুধুমাত্র জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগেই কয়েক হাজার পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ গোলাম মোস্তফার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয়ের ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে থানার পুলিশ সদস্যদের প্রচেষ্টায় উপজেলার প্রায় ৩ শতাধিক পরিবারকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছি। এই ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে সাথে সমাজের বিত্তবানদের অসহায় হতদরিদ্র দিনমজুরদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।