রামপাল প্রকল্প থেকে সরে আসতে আবারও আহ্বান

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ যেকোনো প্রকল্প থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আবার আহ্বান জানিয়েছে সুন্দবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল বলেছেন, রামপালসহ পরিবেশ বিপর্যয়কারী কোনো প্রকল্প হতে দেবেন না দেশের সচেতন নাগরিকরা।

শনিবার সকালে রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি।

এতে সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা আবারও এর পুনরাবৃত্তি করতে চাই যে, সরকার এর ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করছে এবং বারবারই বলছে যে রামপালের কথা কিছু বলা হয়নি। অথচ রামপাল প্রকল্পই নয়, কৌশলগত, পরিবেশগত সমীক্ষা ছাড়া কোনো শিল্প প্রকল্প ওই এলাকায় করা যাবে না, এই কথা ইউনেসকো বলেছে। আর যদি সরকার ইউনেসকোর কথা সত্যি মেনে চলে, তাহলে রামপাল তো দূরের কথা বনের পাশে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানই অনুমতি পায় না।’

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনের পাশে যেকোন ভারী শিল্প কারখানার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন। বনরক্ষায় সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ‘এখানে অন্য কোনো শব্দ নাই বা সেনটেন্স (বাক্য) নাই যেটাতে এটা ইমপ্লাই (ইঙ্গিত) করে যে রামপাল থেকে ইউনেসকো তাদের আপত্তি সরিয়ে নিয়েছে।’

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, সুন্দরবনের পাশে রামপালসহ সব শিল্পকারখানা স্থাপনে ইউনিসকোর আপত্তি সত্ত্বেও সরকার মিথ্যাচার করে প্রকল্প এগিয়ে নিতে চায়।

সুন্দরবন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন যেখানে মিঠা ও লোনা পানির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বিচিত্র জীববৈচিত্র্য। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে বনটি বাংলাদেশের জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করে। তবে সম্প্রতি বনটির আশপাশের এলাকায় অতিমাত্রায় শিল্পায়নের সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে বলে মতামত বিশেষজ্ঞদের। ১৯৯৭ সালে ইউনিসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য মর্যাদা পাওয়া সুন্দরবন নিয়ে সর্বশেষ বিতর্ক সৃষ্টি হয় বনটির পার্শ্ববর্তী বাগেরহাটের রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে। প্রকল্পের বিরোধিতা করে আন্দোলন শুরু করে সুশীল সমাজ, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনসহ সচেতন মানুষ।

সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী উন্মুক্ত আলোচনার জন্য চার মাস আগে রামপাল প্রকল্পের ক্ষতিকর দিক নিয়ে ১৩টি গবেষণা প্রতিবেদন জমা দিলেও এ বিষয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি বলেও জানান বক্তারা।