রাষ্ট্রীয় খরচে এবার হজে ধর্মমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকারই ৮১ ব্যক্তি

একের পর এক হজ ফ্লাইটের সিডিউল বিপর্যয়ের মধ্যেই নিজ নির্বাচনী এলাকার ৮১ জনকে রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাওয়ার সুয়োগ করে দিয়ে নতুন সমালোচনায় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। রোববার সরকারি খরচে হজ পালনের জন্য ৩১৮ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এই তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৩১৮ জনের মধ্যে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের নির্বাচনী এলাকা ময়মনসিংহের রয়েছে ৮১ জন।

এছাড়াও  রাষ্ট্রীয় খরচে পবিত্র হজ পালনের জন্য চারজন সংসদ সদস্যের (এমপি) নামও রাখা হয়েছে। তারা হলেন- ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ কামাল আহমেদ মজুমদার, সংরক্ষিত আসন-৯ চুয়াডাঙ্গার সংসদ সদস্য শিরীন নাইম, সংরক্ষিত আসন-২ কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাটের সংসদ সদস্য সফুরা বেগম, সংরক্ষিত আসন-২১ ময়মনসিংহের ফাতেমা তুজ জহুরা।

তালিকায় আরও উঠে এসেছে বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুধাসদনসহ গণভবনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম রয়েছে।

জানা গেছে, প্রতি বছরই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সম্পূর্ণ সরকারি খরচে হজে পাঠানো হয়। এ তালিকায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত করার নিয়ম থাকলেও তালিকায় খুবই কম সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ঠাঁই হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি খরচে হজে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে হজ গমনেচ্ছুরা কয়েক মাস আগে থেকেই তদবির শুরু করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি খরচে হজে যাওয়ার একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। তদবিরের জোরে অনেকে হজে যাওয়ার সুযোগ পান, কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই মসজিদমুখী হন না। এটা খুবই দুঃখজনক।

এ প্রসঙ্গে জানাতে চাইল ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম-সচিব মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সরকারিভাবে প্রতি বছরই বেশ কিছু লোক হজে যায়। এ তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্বাচিত ভিআইপি ব্যক্তিরা ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ধর্মপ্রাণ মুসল্লির নাম রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে এই তালিকা তৈরি করা হয়। এ বিষয়ে আমাদের কোন মন্তব্য নেই।’