রোজ ৫০০ জন অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে খাওয়ান এই চিকিৎসক!

রোজ ৫০০ জন অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে খাওয়ান তিনি। সম্পূর্ণ নিজের খরচে। তিনি উদয় মোদি।

শুরু হয়েছিল যখন তিনি গুজরাটের আমরেলি গ্রাম থেকে গিয়েছিলেন মুম্বাই। অল্টারনেটিভ মেডিসিন প্র্যাক্টিস করতে। একদিন দেখলেন এক বৃদ্ধ দম্পতিকে। সত্তরোর্ধ্ব সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ওষুধ কিনবেন কী‚ তাদের কাছে বড়া পাও খাওয়ার দশ টাকাই নেই!

চিকিৎসক উদয় মোদি ওষুধের আগে অথর্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধার খাওয়ার ব্যবস্থা করলেন।সেই শুরু।প্রথমে ফ্রি টিফিন সার্ভিসে উদয়ের স্ত্রী কল্পনা বানাতেন ১১ টি টিফিনবক্স ভর্তি খাবার। এখন বানান ২০০ টি ডাব্বা ভর্তি খাবার। দুটি রান্নাঘরে‚ দুজন সাহায্যকারীকে নিয়ে কল্পনা চালান রসুইয়ের রাজসূয় যজ্ঞ। ওই খাবার পেয়ে উপকৃত হন অন্তত ৫০০ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।

প্রতিটা ডাব্বায় থাকে ৬টা করে চাপাটি‚ তরকারি‚ ডাল আর ভাত। রবিবারে ঘরে বানানো স্পেশাল মিষ্টি। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য আলাদা খাবার।

উদয় মোদি এখন চিকিৎসার পাশাপাশি ওষুধের দোকান চালান। অভিনয় করেন টেলিভিশনেও। এছাড়াও আছে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য। সব মিলিয়ে উদয়ের একনিষ্ঠ দৃষ্টি‚ কোনওমতেই যাতে এই খাবার যোগাড় বন্ধ না হয়।

উদয়ের ছেলে কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র। মেয়ে কলেজ পড়ুয়া। প্রতি মাসে গড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। পরিত্যক্ত‚ অবহেলিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে ভরপেট খাওয়াতে। নিজের সব রক্তবিন্দু দিয়ে সেবা চালিয়ে যান উদয়। তার স্থির বিশ্বাস‚ স্ত্রীর সমর্থন না পেলে এটা সম্ভবই হতো না।

তাদের দুই সন্তানও যতটুকু পারে সাহায্য করে বাবা-মাকে। তুলে দেয় যৎসামান্য পকেট মানি থেকে বাঁচানো টাকা। উদয়ের বিশ্বাস‚ কোনও না কোনও ভাবে টাকা আসবেই। তিনিও অসহায় নিরন্নের অন্নদাতার ভূমিকা পালন করে যাবেন।

ভারতের ছোট ছোট শহর থেকে মুম্বই আসে স্বপ্নসন্ধানীরা। উদয়ও একদিন নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন। এসেছিলেন স্বপ্নগরীতে। এখন স্বপ্ন দেখতে শেখান।