রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আলাদা ব্যাটালিয়ন চাইবে পুলিশ

মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার তথা বাংলাদেশের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হতে পারে। তাই রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে ও একটি গণ্ডির মধ্যে রাখতে আলাদা ব্যাটালিয়ন গঠনের দাবি জানাবে বাংলাদেশ পুলিশ। সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্নজনকে দেয়া হবে এই সুপারিশ। এছাড়াও ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩’ বাতিলের জন্য দাবি তোলা হতে পারে। ২০১৭ সালের পুলিশ সপ্তাহেও একই দাবি করেছিল পুলিশ।

‘জঙ্গি ও মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ এ স্লোগানে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ৫ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ। এতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরও ৫ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবে পুলিশ। এ সময় পুলিশের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া হবে নতুন নতুন সুপারিশ। এদের মধ্যে এই দুইটি থাকবে উল্লেখযোগ্য।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সূত্র জানায়, ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩’ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের ক্ষোভ রয়েছে। ২০১৩ সালে এ আইন প্রণয়নের পর থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। অনেক অপরাধীও এ সুযোগ নিচ্ছে। এ বিষয়ে গত বছর পুলিশ সপ্তাহেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইনটি বাতিলের দাবি তোলা হয়।

এছাড়াও মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করায় পর্যটন জেলা কক্সবাজারের নিরাপত্তা চরমভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চেয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের মতো একটি ব্যাটালিয়ন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে পুলিশ সপ্তাহে।

পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এবারের পুলিশ সপ্তাহেও জনবল, আবাসন ও যানবাহন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কাছে তুলে ধরা হবে। পুরনো অনেক দাবি-দাওয়াও তাদের কাছে নতুন করে তুলে ধরা হবে। জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের নতুন বিশেষায়িত অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটকে শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাওয়া হবে। এছাড়াও সামরিক বাহিনী পরিচালিত আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আদলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় পুলিশ প্রশাসন।

পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও আবাসন, যানবাহন ও জনবল সংকট নিয়ে আলোচনা হবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রতিবার সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রতিশ্রুতিও মেলে কিন্তু সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয় না।

পুলিশের দাবি-দাওয়া নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘পুলিশ সপ্তাহে বাহিনীর পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কোনো দাবি তোলা হয় না। তবে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনার সময় বিভিন্ন বিষয় ওঠে আসে।’