রোহিঙ্গা শরণার্থী : হিমশিম খাচ্ছে ত্রাণ সংস্থাগুলো

মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ত্রাণ সংস্থাগুলো।

তারা বলছে, মিয়ানমার থেকে শরণার্থীদের বন্যার মতো ঢল নেমেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন শরণার্থী আসছেন। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। তারা সবাই ক্ষুধার্ত। এদের কেউ কেউ আহত, কেউ কেউ অসুস্থ। এত শরণার্থীকে একসঙ্গে খাবার ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলোর দাবি, ইতোমধ্যে একলাখেরও বেশি মানুষকে তারা নিয়মিত খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ১৮ মিলিয়ন (এক কোটি ৮০ লাখ ডলার) আর্থিক অনুদান চেয়েছে।

২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে একযোগে নিরাপত্তা বাহিনীর ছাউনিতে আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) হামলা চালায়।

এরপর সেদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর যে সহিংসতা শুরু করে, তারপর সেদেশ থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখ ২৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।

এদিকে, প্রতিদিনই দলে দলে রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান পাভলো কলোভোস এক বিবৃতিতে বলেন, এখানে (বাংলাদেশে) এত বেশি সংখ্যক শরণার্থী প্রবেশ করেছেন যে, তাদের সহায়তা দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন। এখন আমাদের জন্য তা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এত শরণার্থীর আগমন ঘটেনি।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি, হতাশাগ্রস্ত এবং ভীতসন্ত্রস্ত মানুষজন ছুটে আসছেন। এদের মধ্যে আহতও রয়েছেন। কোনো কোনো নারী এই অবস্থার মধ্যে শিশুর জন্ম দিচ্ছেন।

কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি জানায়, সহিংসতা কবলিত মিয়ানমারে এখন কত রোহিঙ্গা রয়েছেন, তা পরিষ্কার নয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উত্তর রাখাইন প্রদেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাস করতেন। কিন্তু সহিংসতা শুরুর পর কোনো ত্রাণ সংস্থাকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক বলেছেন, সহিংসতা কবলিত রাখাইন প্রদেশে আগে ২৮ হাজার শিশুকে মানসিক যত্ম নেওয়া হচ্ছিল। এছাড়া এ প্রদেশের বুথিডং ও মৌডঙ্গে যে চার হাজার শিশু অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছিল,তাদের আর সহযোগিতা দেওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যকম স্থগিত রাখতে হয়েছে। অনেক স্কুল পুনর্নিমাণ করা হচ্ছিল, সেটিও এখন বন্ধ রয়েছে।