লালমনিরহাট ২ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুজ্জামান আহমেদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চার মাস। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আগামীতে কোন দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। কোন এলাকায় কে এমপি নির্বাচিত হলে জনস্বার্থ প্রধান্য পাবে তা নিয়েও কম আলোচনা হচ্ছে না। এই আলোচনায় উঠে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা। আর এসব নামের তালিকায় স্থান পেয়েছে নতুন নেতৃত্বের নাম।

সারাদেশের ন্যায় এমন আলোচনা হতে পিছিয়ে নেই লালমনিরহাট-২ আসন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়েই বের হয়ে আসছে কর্মী ও জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম।

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ -আদিতমারী এ দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত লালমনিরহাট -২ আসন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ নুরুজ্জামান আহমেদ। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে আসছে। স্থানীয়রা ভোটাররা আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জনবান্ধব প্রার্থী কামনা করছেন।

এই আলোচনায় স্থান পেয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের দু’বারের আওয়ামী লীগ মনোনীত বিজয়ী চেয়ারম্যান, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুজ্জামান আহমেদ। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই নেতাকে নিয়ে স্থানীয়রা এবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ১৯৬৩ সালে ১৩ ই ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার কাশীরাম গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টর অন্যতম সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য, মরহুম আলহাজ্ব করিম উদ্দিন আহমেদ মাতা নুরজাহান করিম। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া এ মানুষটি ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্যদিয়ে তার রাজনৈতিক জীবনের হাতেখড়ি ঘটান।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে এ মানুষটি ১৯৭৯ সালে তার সুযোগ্য নেতৃত্ব গুনে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৮২ -১৯৮৫ সাল পর্যন্ত যিনি কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, ১৯৮৫-১৯৯০ সালে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এ মানুষটি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন, ১৯৯৬-২০০২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ -২০২১ পযর্ন্ত তিনি তার সুযোগ্য নেতৃত্বে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে লালন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন সর্বদা মানুষের সেবায়। রাজনৈতিক জীবনে তিনি তার সুযোগ্য নেতৃত্বে তিনি নিজেকে তৃনমূল আওয়ামী লীগের একজন পরিছন্ন নেতা হিসেবে নিজেকে প্রস্ফুটিত করেছেন। যিনি দলমতের ঊর্ধ্বে হয়ে উঠেছেন সর্বস্তরের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিক।

স্থানীয়রা জানান, মাহবুবুজ্জামান আহমদ তৃনমুল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর পাশে থেকে তাদের খোঁজ খবর নেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নেন। করোনা ভাইরাস দুর্যোগের সময় রাজনৈতিক নেতাদের যখন মাঠে খুঁজে পাওয়া যায়নি, মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা যায়নি তখন দিনের পর দিন মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ঘর হতে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন করোনা মোকাবেলায়। সেসময় তিনি কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন খাদ্য সহায়তা নিয়ে। স্থাস্থ্য সামগ্রী প্রত্যন্ত এলাকায় রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে হেঁটে বিতরণ করেছেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করেছিলেন অক্সিজেন কনসোল্টেডার মেশিন। করোনার দুই বছরের অধিকাংশ সময় তিনি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অসহায় মানুষের জন্যে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন।

এলাকার শীতার্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন একজন সাধারণ মানুষের মত। উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েও তিনি সাধারণ ভ্যানে চড়ে রাতের আধাঁরে শীত বস্ত্র নিয়ে ছুটেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত নম্র, ভদ্র, সদাহাস্যোজ্জ্বল ও সাদা মনের মানুষ। তাঁর মাঝে কোন অহংকার নেই। নিরহংকারী এই মানুষটির নিকট মানুষ সহজেই তার পাশে বসে কথা বলার সুযোগ পেয়ে থাকেন আর তাই তিনি দলমত নির্বিশেষে আজ সকলের কাছে প্রিয় ব‌্যক্তি হয়ে উঠেছেন।

একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে মাহবুবুজ্জামান কখনও দলচ্যুত বা দলের বিপক্ষে কাজ করেননি। বরং তিনি দলের জন্য, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে তৃনমূল আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে চলেছেন। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তিনি নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত এবং কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে পরপর দুবার বিজয়ী ও পরপর তিনবার রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরও দলীয় গ্রুপিং আর বিভক্তির কারনে গত কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মাহবুবুজ্জামান আহমেদকে সম্মান জানিয়ে দাওয়াত করা না হলেও তিনি দল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মান ও শুভেচ্ছা জানাতে নিজ কর্মী সমর্থকের বিশাল মিছিল নিয়ে সম্মেলন স্থলে হাজির হয়ে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের সম্মুখে মাটিতে বসে সকলের বক্তব্য শুনেন। তার দলের প্রতি এমন আনুগত্য প্রকাশ লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি তার এ ভালোবাসা একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।

এই সফল মানুষটি দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষের বিপদ আপদে ছুটে যান। এলাকায় তিনি একজন সাদা মনের উদার মানসিকতার ও দানশীল মানুষ হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছেন।

বিষয়ে স্থানীয় জনগন বলেন, আমরা নেতা বা উপজেলা চেয়ারম্যান বুঝিনা। মাহবুবুজ্জামান আহমেদ একজন ভাল মানুষ। তিনি একজন কর্মঠ মানুষ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থেকে এলাকার উন্নয়নে ভুমিকা রেখে চলেছেন। আমাদের দু:খ দুর্দশায় তাঁকে সহজেই পাশে পাওয়া যায়। আমরা এমন নেতৃত্বকে আগামী দিনে লালমনিরহাট -২ তথা কালীগঞ্জ – আদিতমারীর দুই উপজেলার মানুষের নেতৃত্বে দেখতে চাই।

কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, এলাকাটি অনুন্নয়ন হওয়ায় দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তাদের উন্নয়নে বেশী পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভীষণ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। তার উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ জনগণের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছি। আমি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের সেবা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করবো।

তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যদি আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আমি আমার দক্ষ নেতৃত্বগুনে লালমনিরহাট-২ আসনের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রেখেই কাজ করে যাবো। তিনি বলেন, আমি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।