শখের বসে ড্রাগন চাষ, এখন তিনি বানিজ্যিক খামারী

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শখের বসে ড্রাগন চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সৌখিন এক চাষী। কৃষি মেলা দেখে অনুপ্রেরণা পেয়ে মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে এখন তিনি হয়ে উঠেছেন বানিজ্যিক খামারী।
পরিবারের উৎসাহ নিয়ে ২০১২ সালে ২ লাখ টাকা নিয়ে শুরু করলেও ২০১৮ সালে বানিজ্যিক ভাবে ড্রাগন খামার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন এ চাষী। পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ এ সুস্বাদু ফল উৎপাদন করে এখন ১৫ লাখ টাকার মূলধন নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছেন সফল এক খামরী হিসেবে।
এক সময়ের সৌখিন এ খামারী এখন কৃষি নির্ভরশীল হয়েই চলছে তার সংসার জীবন।

উপজেলার বালিয়াতলী ইউপির কাংকুনীপাড়া গ্রামে চার একর জমিতে ড্রাগন সহ সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন খামরী মোস্তফা জামান।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সমৃদ্ধ এ কৃষি খামারে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন ফলের গাছ। বিভিন্ন গাছে ঝুলছে লাল রঙের পরিপক্ক ড্রাগন। পাশাপাশি রয়েছে কলা, লিচু, পেয়ারা, মাল্টা, পেঁপে, এলাচ সহ প্রভৃতি ফলের বাগান।

এছাড়াও একই সাথে তিনি গড়ে তুলেছেন মাছের ঘের, গরু এবং পাহাড়ি গাঁড়লসহ দেশি মুরগীর খামার।

স্থানীয়রা বলছেন, ‘মোস্তফার অণুপ্রেরণায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি উপজেলায় এখন গড়ে উঠছে একাধিক ছোট বড় ড্রাগন খামার।’

খামারী মোস্তফা জামান বলেন, ‘বর্তমানে তার খামারে ভিয়েতনামের ড্রাগন(বারি-১) এবং স্থানীয় দেশি প্রজাতির ড্রাগনসহ লাল, সাদা, হলুদ এবং গোলাপি এই চার রঙের ড্রাগন উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে লাল রঙ্গের ড্রাগনের উৎপাদন এবং চাহিদা অনেক বেশি।’

এছাড়া খামার থেকে ড্রাগন কাটিং বিক্রি করেও অনেক উপার্জন হচ্ছে তার।

প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ খামার দেখতে আসেন বলেও তিনি আনন্দ পান।

তবে পটুয়াখালী হর্টিকালচার ও উপজেলা কৃষি অফিসসহ ব্লু-গোল্ড তার খামার উন্নয়নে সহায়তা করেছে বলে কৃতজ্ঞ তিনি।

বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, ‘মোস্তফার ড্রাগন খামার ঘুরে দেখে আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমি আশা করছি তার এ বাগান দেখে এলাকার বেকার যুবকেরা চাকরির পিছনে না ঘুরে খামার করতে আগ্রহী হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ জানান, ‘ড্রাগন কলাপাড়া উপজেলায় নতুন এবং জনপ্রিয় একটি ফসল। কলাপাড়া উপজেলা এসএসিবি প্রকল্পের আওতায় সাতটি ড্রাগন খামার গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে গোলাম মোস্তফার খামারটি উল্লেখযোগ্য।’

তিনি আরও জানান, ‘ড্রাগন বাগান সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। প্রতিনিয়ত কৃষকদের ভিজিট করা হচ্ছে। নুতন উদ্দোক্তাদের সকল ধরনের কারিগরি সহায়তা প্রদান করে সার বীজ এবং চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে সহায়তা করা হবে।’