শিমুলিয়ায় ভোগান্তি এখনও চরমে

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে পদ্মা নদীতে নাব্যতার সংকট ও তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নদীতে ডুবোচরের কারণে ফেরি পারাপারে স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণ বেশি সময় লাগছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই পথে চলাচলকারী যাত্রীরা। প্রয়োজনের তুলনায় ফেরি কম হওয়ায় ঈদের দ্বিতীয় দিনও পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েক শ গাড়ি।

ঘাট এলাকার যাত্রী, চালক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীর পানি কমে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নাব্যতার সংকট। লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট থেকে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি যেতে যেখানে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগত, সেখানে এখন চার দিন যাবৎ তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগছে। রো রো ফেরিগুলো বিভিন্ন সময় ডুবোচরে আটকে যাওয়ায় সেগুলো বন্ধ রয়েছে। রোববার মাঝারি ফেরিগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পদ্মায় প্রবল স্রোতের কারণে ফেরিগুলো গতি তুলতে পারছে না।

বরিশালের গলাচিপার মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। আজ বাড়ি যাওয়ার জন্য খুব সকালে ঘাটে এসেছি। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত আমাদের গাড়ি সিরিয়াল পায়নি।’ যশোরের ট্রাকচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘাট এলাকায় বসে আছি আজ পাঁচ দিন। মালবোঝাই গাড়ি ফেলেও যেতে পারছি না।’ বাগেরহাটগামী একটি বাসের যাত্রী সোহেল রানা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই নদীতে ফেরি ঠিকমতো চলাচল করতে পারছে না। কিন্তু বিআইডব্লিউটিসি কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। ভেবেছিলাম, আজ হয়তো ঠিকমতো বাড়ি ফিরতে পারব। কিন্তু তা আর হচ্ছে না।’

শিমুলিয়া ঘাটে দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নাব্যতার সংকটের জন্য গতকাল শনিবার সকালে ও বিকেলে দুটি ফেরি ডুবোচরে আটকে যায়। এ কারণে ঘাট এলাকায় আজ ভোর থেকেই যানবাহনের চাপে জটের সৃষ্টি হয়েছে।

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির সহকারী পরিচালক শাহ মো. খালিদ নেওয়াজ জানান, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবের কথা মাথায় রেখে গত বুধবার থেকে ১৯টি ফেরি পারাপারের কাজে ব্যবহারের কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। বড় ও মাঝারি ফেরিগুলো চলতে কমপক্ষে ছয় থেকে সাড়ে ছয় ফুট পানির দরকার হয়। কিন্তু বর্তমানে নদীতে অনেক জায়গায় সেই পরিমাণ পানি নেই। দুই দিন ধরে বড় ফেরিগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ মাঝারি ফেরিও বন্ধ। ছোট ফেরিগুলোও বিভিন্ন সময় চরে আটকে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএর নদী খননের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের কয়েক দিন ধরেই নদী খননের কথা বলা হচ্ছে। তাঁরা করবে করবে বলে করছেন না। তাঁদের গাফিলতির কারণেই আজ যাত্রীদের এ দুর্ভোগ।