শেরপুরে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করতে নিজ বাড়িতে আগুন

বগুড়ার শেরপুরে স্ত্রী-ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির দরজা বন্ধ করে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শনিবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে শেরপুর পৌরশহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খন্দকারপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত দুদু মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম বিগত চার থেকে পাঁচ বছর আগে বরিশালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রী শাহানাজ পারভীনকে কোনো খরচ না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাতে থাকেন। সেইসঙ্গে নানা হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চরম আকার ধারণ করে।

এরই জের ধরে শনিবার সকাল ৯টার দিকে প্রথমে স্ত্রী শাহনাজ পারভীন, ছেলে আবু নোমান ও ছেলের বউ মুক্তা আক্তারকে মারপিট করতে থাকেন তিনি। একইসঙ্গে বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর চালান। এ সময় তারা জীবন রক্ষার্থে ৯৯৯- এ ফোন দেন। এরপর শেরপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধারসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চলে যায়।

কিন্তু এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নজরুল ইসলাম। দুপুর ১২টার দিকে নজরুল ইসলাম বাড়ির দরজা বন্ধ করে স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

নজরুল ইসলামের ছেলে আবু নোমান অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়ে বাবা আগুন ধরিয়ে চলে যায়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে উদ্ধার করেছে।

স্ত্রী শাহানাজ পারভীন বলেন, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে জীবননাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল স্বামী নজরুল ইসলাম। সেইসঙ্গে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্যও নানামুখি চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্বামীর বসতভিটা ছেড়ে না যাওয়ার কারণেই আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির দরজা বন্ধ করে আগুন দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন তিনি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ৯৯৯ থেকে একটি ফোন পেয়ে জানতে পারি খন্দকারপাড়ায় একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরবর্তীতে সেখানে আবার বাড়ির দরজা বন্ধ করে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।