শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সঙ্কটে নাকাল জনজীবন। জ্বালানি তেল, শিশু খাদ্য থেকে শুরু করে সবকিছু দাম আকাশচুম্বি। কাগজের অভাবে ‍স্কুলগুলো পরীক্ষা নিতে পারছে না, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের অভাবে বন্ধ অনেক জরুরি অস্ত্রোপচার। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় বেশকিছুদিন ধরেই এই অবস্থা বিরাজ করছে।

দেশের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া তিনটি রাজনৈতিক দল লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পরিবর্তে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।

গতকাল সোমবার এমন প্রস্তাব আনার বিষয়টি জানায় দলগুলো।

এর আগে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ছাড়া পদত্যাগ করেন মন্ত্রিসভার সব সদস্য। এরপর প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন এবং সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

তবে তিনটি শরিকদলের ১৬ জন সংসদ সদস্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এরইমধ্যে তারা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সর্বদলীয় সরকার গঠনের ব্যাপারে। তবে বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।

জাথিকা হেলা উরুমায়া পার্টির প্রধান উদয় গাম্মানপিলা বলেন, আমাদের প্রস্তাব হলো, সব দলের অংশগ্রহণে একটি কমিটি গঠন করা। সর্বদলীয় ওই কমিটি একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী নিয়োগ করলে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন তারা।

এর আগে রবিবার (১০ এপ্রিল) তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (টিএনএ) জানায়, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পার্লামেন্টে বিরোধী সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তাতে দলটি সমর্থন দেবে।

২২৫ আসন বিশিষ্ট দেশটির পার্লামেন্টে সামাগি জনা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) ও তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (টিএনএ) সমন্বয়ে আসন রয়েছে ৬৪টি। জোট গঠন করে ১৫০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করেছিল শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) দল। কিন্তু সম্প্রতি জোটের ৪২ জন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করে নিজেদের স্বতন্ত্র বলে ঘোষণা দেন।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে।

দেশটিতে মার্চে খাবারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই। পর্যটনখাতের ওপর নির্ভরশীল দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।

অর্থনৈতিক সঙ্কট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারকে তাগাদা দিয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল এসজেবি। আর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সরকারকে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি করার হুমকি দিয়েছে দলটি।

সূত্র: রয়টার্স।