সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে তারকাদের জয়-পরাজয়

হয়ে গেলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চোখ ছিল তারকাপ্রার্থীদের দিকে। আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন শোবিজ অঙ্গনের কয়েকজন তারকা।

এরমধ্যে ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গুণী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এবং চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
এছাড়া চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি অংশ নিয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে, নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর হয়ে সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে অংশ নেন নকুল কুমার বিশ্বাস।
এরমধ্যে ফল ঘোষণার আগেই অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ডলি সায়ন্তনী।

বরিশাল-২ থেকে শিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস নির্বাচনে অংশ নিলেও এ অঞ্চলের মানুষ নির্বাচিত করেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে।
নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া মেনন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

অন্যদিকে প্রচার প্রচারণায় চমক দেখালেও ভোটযুদ্ধে হেরে গেছেন নায়িকা মাহিয়া মাহি। রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া এই নায়িকা পেয়েছেন মাত্র ৯ হাজার ৯টি ভোট। তার আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী।
তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট। একই আসনে থাকা আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানী পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট! এমন কি মাহির জামানতও বাতিল হয়েছে।

তারকাদের মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর এবং ফেরদৌস আহমেদ। নীলফামারী-২ থেকে আসাদুজ্জামান নূর পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৩৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর জয়নাল আবেদীন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৮৪ ভোট। অর্থ্যাৎ ১ লাখের বেশী ভোট পেয়ে নির্বাচিত হলেন ‘বাকের ভাই’ খ্যাত এই অভিনেতা। এ নিয়ে টানা ৫ বার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলেন সাবেক এই সংস্কৃতিমন্ত্রী।

অন্যদিকে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে পা রেখেই জয় লাভ করলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ঢাকা-১০ আসন থেকে এই অভিনেতা নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শামসুল আলম আম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ ভোট।

তবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়েও ভোটযুদ্ধে এবার হেরে গেছেন সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম।মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে এরআগে দুই বার নির্বাচিত হলেও এবার পারলেন না তিনি। ‘হ্যাট্রিক’ এর সুযোগ হারালেন এই শিল্পী ও নেত্রী। এই আসনে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলু। তিনি পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৫২৫ ভোট। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৭৮ হাজার ২৬৯ ভোট।

বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম ও কাহালু) আসনে সর্বনিম্ন ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন একতারা প্রতীক প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৫ ভোট। এই আসনে ১৪ দলীয় প্রার্থী জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪২ হাজার ৭৫৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।