সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এক সাবেক চেয়ারম্যান ২০ লাখ টাকা দিয়ে সুদ নিয়েছেন ৭০ লাখ!

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সাবেক চেয়ারম্যান আসলামুল কর্তৃক ইটাভাটা মালিককে তাড়িয়ে ২ কোটি টাকার মালামালসহ ইটভাটা দখলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, কলারোয়া উপজেলার পুটুনি গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পারুল আক্তার।

লিখিত অভিযোগে পারুল আক্তার বলেন, আমার স্বামী আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কলারোয়া উপজেলা চিতলা বটতলা এলাকায় পারুল ব্রিকস নামে ইটভাটা পরিচালনা করে আসছিলেন। দাম্পত্য জীবনে আমার ৪ বছর একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ভাটা পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে টাকার প্রয়োজন হওয়ায় চড়াসুদে কিছু মানুষের কাছ থেকে টাকা গ্রহন করেন। আবার পরিশোধও করেন। গত ৪ বছর পূর্বে শাকদহা এলাকার মৃত. আতর আলী খানের পুত্র কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আসলামুল ইসলাম আমার স্বামীর কাছে গিয়ে বলে টাকা যা লাগে আমি দেবো। আপনি প্রতিলাখে আমাকে ৩০ হাজার টাকা সুদ দিবেন। প্রথমে আমার স্বামী রাজি না হলেও বিভিন্ন সময়ে টাকার প্রয়োজন হওয়ায় উপায়ন্তর হয়ে একপর্যায়ে তার কাছ থেকে ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। গত ৪ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে ইট এবং নগদ টাকাসহ প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা আসলামুলকে দিয়েছে আমার স্বামী আলমগীর। তারপরও আসলামুলের সুদের টাকা পরিশোধ হয়নি। এরপরও গত বছর আসলামুলের চাপাপাতিতে নিজের বাড়ি বিক্রয় করে ১২ লক্ষ টাকা আসলামুলের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন স্বামী। কিন্তু ওই পর সম্পদলোভী আসলামুল এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়েও কৌশলে আমার স্বামীর ইটভাটাটি দখলের চক্রান্ত শুরু করে। ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা দেওয়া হলেও আসলামুলের টাকা পরিশোধ হচ্ছে না। একপর্যায়ে জমির মালিকদের সাথে যোগসাজস করে আসলামুল তার সুদের টাকার সুযোগ নিয়ে ভাটা দখল নিয়ে আমাকে তাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে। ৩০ মার্চ আসলামুল ভাটা দখলের উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে ভাটায় প্রবেশ করে। ভাটার ম্যানেজারসহ কর্মচারীদের সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি এবং আমার স্বামী সেখানে গেলে মারপিটসহ খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসলামুল।

তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছরে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আমার স্বামী। বর্তমানে কোটি কোটি টাকা ঋণের বোঝা স্বামীর মাথায়। ইতোমধ্যে নিজের বাড়িও বিক্রয় করে দিয়ে গৃহহারা। আমার স্বামীর একমাত্র সম্বল ইটভাটা। সেটিও দখল করতে মরিয়া ওই আসলামুল। ইতোমধ্যে আসলামুলের ইন্ধনে কতিপয় ব্যক্তি আমাদের ইটভাটায় প্রবেশ করে আমার স্বামীকে মারপিটও করে। ওই ইটভাটাটিই আমাদের একমাত্র সম্বল। সেটি দখল করে নিলে আমাদের শিশু কন্যাসহ স্ব পরিবারে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকবে না। বহু মানুষ স্বামীর কাছে টাকা পাবে। ভাটা চালাতে না পারলে টাকা পরিশোধ করতে পারবে না। পথে ভিখারী হয়ে ঘুরতে হবে।

আসলামুলের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে একমাত্র সম্বল ইটভাটা রক্ষা পূর্বক আমার স্বামী যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারে সেই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।