সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ধর্ষণে স্কুলছাত্রীকে অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় আদালতে মামলা

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মাতা তাহিরন বেগম।

সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক মামলাটি কালিগঞ্জ থানাকে এফ,আই,আর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানাজানি পর হতে ধর্ষক কলেজছাত্র সোহাগ হোসেন বাবু এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে (৭ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামে।

বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত এক মাস আগে গ্রাম্য মাতব্বর সুরত আলী, নাসির, রেজাউল মোল্লা বসে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য তার বাবাকে চাপ প্রয়োগ করলে মীমাংসা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।

সোমবার বেলা ১১ টার সময় সরেজমিনে চাঁচাই গ্রামে গেলে আদালতের মামলা সূত্রে এবং ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী, তার বাবা আব্দুল আজিজ মোড়ল, মাতা তাহিরন বেগম, বড় বোন মঞ্জু আরা সহ গ্রামের ফজর আলী সিদ্দিক সহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, চাঁচাই গ্রামের বিদেশ ফেরত ছবিলার রহমান মোড়লের পুত্র দক্ষিণ শ্রীপুর কুশুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী লম্পট সোহাগ হোসেন বাবু তার প্রতিবেশী গরীব,অসহায় ও দিনমজুর আব্দুল আজিজের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া শিশুকন্যাকে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়।

প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে বিয়ের আশ্বাসে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীকে সুযোগ বুঝে বাবা—মা লোকের বাড়িতে দিন—মজুরের কাজ করতে গেলে এই সুযোগে তাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে আসছিল। ধর্ষণে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানতে পেরে লম্পট সোহাগ হোসেন বাবু কয়েক মাস পর বিয়ে করার প্রতিশ্রম্নতি এবং কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। এইভাবে কালক্ষেপণে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বার ৬ মাস অতিক্রান্ত হলে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে।

ঘটনাটি তার বাবা—মাকে খুলে বললে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে নিয়ে গত ২—ডিসেম্বর কালিগঞ্জে অবস্থিত যমুনা ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি করলে ২৮ সপ্তাহ এর অন্তঃসত্ত্বা ধরা পড়ে। ঘটনা জানতে পেরে লম্পট কলেজছাত্র সোহাগ হোসেন বাবু বাড়ি হতে পালিয়ে যায়। পরে সোহাগের পিতা ছবিলার রহমান গ্রাম্য মাতবরদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে কৌশলে অন্তঃসত্ত্বার পেটের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগী ধর্ষিতার বাবা—মা ও পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে।

বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর পিতা—মাতা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ২/৩ দিন আগে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ নেয়নি বলে জানান। পরে গত ৭ ডিসেম্বর ভুক্তভোগির মা তাাহিরন বেগম বাদী হয়ে কলেজ ছাত্র সোহাগ হোসেন বাবু কে আসামি করে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯(১) ধারায় একটি পিটিশন মামলা দায়ের করে। মামলা নং— ৫৪৫/২১। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে সত্যতা জানার জন্য লম্পট কলেজ ছাত্রের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এ ব্যাপারে তার চাচা আবু সাঈদ এবং গোলাম মোস্তফা সাংবাদিক দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে এবং বলে এখানে আপনাদের আসতে কে বলেছে। আমরা মামলায় দেখে নেব আপনারা যান।

ঘটনার সত্যতা জানার জন্য কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান বিষয়টি আমার জানা নাই। আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা এখনো পায়নি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।