‘সিংঘমের দাপটে নয়, মন জিতুন ভালবাসায়’

হিন্দি ছবির ‘সিংঘম’ হলে চলবে না। লোকে হাতের মুঠোয় থাকবে, সমাজবিরোধীরা ভয়ে কাঁপবে— এমন মনোভাব ঝেড়ে ফেলে নিজের ব্যবহার দিয়ে মানুষের মন জয় করাটা জরুরি। নতুন আইপিএস অফিসারদের আজ এই পরামর্শই দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনি বললেন, কাশ্মীরের নবীন প্রজন্মের ‘ভুল পথে’ যাওয়া আটকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন মহিলা পুলিশ অফিসারেরাই।

এ বছর ২৮ জন মহিলা-সহ ১৩১ জন আইপিএস প্রথম পর্বের ৪২ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। তাঁরা শনিবার হায়দরাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল জাতীয় পুলিশ অ্যাকাডেমিতে ‘দীক্ষান্ত প্যারেডে’ অংশ নেন। করোনা পরিস্থিতিতে ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমেই সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বক্তৃতায় অফিসারদের নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘কাজ করতে গিয়ে আপনাদের অনেক অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। অনেক অবাঞ্ছিত লোক ঘুরঘুর করবে। সাবধান থাকতে হবে তাদের থেকে।’

এই সূত্রেই পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে জোর দেন মোদী।
বলেন, ‘যে পুলিশ অফিসারেরা ‘সিংঘম’ দেখে মানুষের মনে ভয় ধরানোর কথা ভাবেন, তাঁরা ভবিষ্যতে উদ্ধত হয়ে পড়েন। মানুষও তাঁদের ভাল কাজগুলো না-দেখে পুলিশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকেন। তাই সকলের ভালবাসা অর্জন করতে হবে।’

অজয় দেবগণ অভিনীত পর্দার ‘সিংঘম’ অবশ্য দুষ্টের দমন করলেও আমজনতার মনে ভয় ধরাতেন না। বিজেপি নেতারা তাই বলছেন, ‘সিংঘম’ বলে মোদী আসলে ‘দম্ভ’ এড়াতে বলেছেন।

আগেও হিন্দি ছবির নাম নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালে ছত্তীসগঢ়ের জগদলপুরের জেলাশাসক অমিত কাটারিয়া নীল শার্ট ও সানগ্লাস পরে প্রধানমন্ত্রীকে হেলিপ্যাডে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়েছিলেন। সূত্রের মতে, সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে করমর্দন করে বলেন, ‘(এই যে) দবঙ্গ জেলাশাসক, কেমন আছেন?’ পরে অবশ্য পোশাকবিধি না-মানার জন্য কাটারিয়াকে শো-কজ় নোটিশ ধরায় প্রশাসন।

৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নবীন অফিসারদের কাছে তাঁদের প্রশিক্ষণ-পর্বের অভিজ্ঞতা শুনতে চান।

বিহারের অফিসার তনুশ্রীর প্রশিক্ষণ হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে। সন্ত্রাস-দমন অভিযানেও গিয়েছিলেন। পুলিশে যোগ দেওয়ার আগে গুজরাতের গাঁধীনগরে টেক্সটাইল ডিজাইনিং নিয়ে পড়েছিলেন তনুশ্রী।

সেই কথা জেনে মোদী বলেন, ‘পশমিনা শালে জম্মু-কাশ্মীরের মহিলাদের হাতের কাজ দেখার মতো। তনুশ্রীর উচিত, আধুনিক বয়নশিল্প নিয়ে তাঁর শিক্ষাকে চিরাচরিত শিল্পের সঙ্গে মিলিয়ে সেখানের মহিলাদের আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করা।’

প্রধানমন্ত্রীর মতে, এতে পুলিশের উপরে আস্থা বাড়বে মানুষের। উপত্যকার বাচ্চারা ভুল পথে যাওয়ার আগেই তাদের আটকানো যাবে। মায়েদের বুঝিয়ে মহিলা অফিসারেরাই এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবেন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা