সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দুরারোগ্য ব্যাধি ফিস্টুলা রোগ প্রতিরোধে সেমিনার

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দুরারোগ্য ব্যাধি ফিস্টুলা রোগের উপর সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সকাল ১১টায় শাহজাদপুর প্রেসক্লাবে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। স্বেচ্ছা সেবক প্রতিষ্ঠান ল্যাম্ব হাসপাতালের আয়োজনে সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনে ফিস্টুলা রোগ, রোগের কারণ এবং ফিস্টুলার বর্তমান পরিস্থিতির উপর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. শাফিকা রিফাত কানিজ, ল্যাম্ব হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার মাহতাব লিটন, ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ডা. তাহমিনা সোনিয়া।

বক্তরা বলেন, ফিস্টুলা হলো মেয়েদের মাসিকের রাস্তার সাথে মূত্রথলি অথবা মলাশয়ের এক বা একাধিক অস্বাভাবিক ছিদ্র হয়ে যুক্ত হওয়া। যার ফলে মাসিকের রাস্তা দিয়ে সবসময় প্রসাব কিংবা পায়খানা অথবা উভয়ই ঝরতে পারে। বক্তরা বলেন, ফিস্টুলা হওয়ার মূল কারণ গুলো হলো- বিলম্বিত প্রসব বা বাধা গ্রস্থ প্রসব, বাল্য বিবাহ এবং কমবয়সে বাচ্চা নেয়া, ২০ বছরে বয়সে আগেই মেয়েদের বাচ্চা নেয়া, জরুরী প্রসূতি সেবার অভাব বা অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা প্রসাব না করানো তলপেট বা জরায়ুতে ভুল অপারেশনে ক্ষতি, অদক্ষ ধাত্রী বা আত্মীয় প্রতিবেশির মাধ্যমে প্রসব করানো ইত্যাদি। ফিস্টুলা রোগীদের সহজে চেনার উপায় হচ্ছে রোগীর সবসময় প্রসাব বা পায়খানা অথবা উভয়ই ঝরতে থাকবে। সেক্ষেত্রে তা প্রসাব বা পায়খানার কোন চাপ বা বেগ অনুভব হবে না। সবসময় কাপড় ভেজা থাকবে। রোগীর শরীর থেকে দুর্গদ্ধ ছাড়াবে। রোগীর এ সমস্যা শুরু হবে বাচ্চা ডেলিভারির পর কিংবা তলপেট জরায়ুতে কোন অপারেশন এর পর বিশেষ বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ নারী ফিস্টুলা রোগের ভুগছেন এবং প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার নতুন রোগী যোগ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রায় ২০ হাজার নারী ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন এবং প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার নতুন রোগী যোগ হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের কারিগরি সহায়তায় জাতি সংঘ জনসংখ্যা তহবিলের অর্থায়নে ল্যাম্ব হাসপাতাল কর্তৃক বাস্তবায়িত এ্যাডভোকেশি বিষয়ে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাথে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানের অংশ হিসাবে অনুষ্ঠিত সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি আবুল কাশেম।

ল্যাব হাসপাতালের বগুড়া সিরাজগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জেলা সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র নারীদের ফিস্টুলা রোগের রোগীগের বিনা পায়সায় চিকিৎসা দিয়ে থাকে ল্যাম্ব হাসপাতাল। যেখানে একটি রোগীর চিকিৎসায় খরচ হয় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। দেশের বাহিরে তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। কিন্তু আমরা বিনা মূল্যে এ চিকিৎসা করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা শেষে সমাজ সেবা অধিদপ্তর এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফিস্টুলা রোগীদের পূর্ণবাসন করা হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক ও ল্যাম্ব হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হওয়া উপজেলা রতনকান্দি গ্রামের আলেয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।