সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন এলাকা

সিরাজগঞ্জ সদরে আবারো শুরু হয়েছে যমুনা নদীর ভাঙন। এরই মধ্যে নিঃস্ব হয়েছেন এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ। শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অবৈধভাবে নদী থেকে বালু তোলায় তাদের এই দুর্ভোগ। হামলা আর মামলার ভয়ে বালু তোলার প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছেন না কেউ।

তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, শুধু বালু তোলা নয়, নদীর গতিপথ পরিবর্তনে এমন ভাঙন শুরু হয়েছে।

গত বছর যমুনার ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়েছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিমলা, পাঁচঠাকুরী বালিঘুঘরি এলাকার অসংখ্য বসতভিটাসহ ফসলি জমি।

এরপর কিছুদিন দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো ভাঙন। গত রোববার নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে যমুনায়। এরই মধ্যে নদীতে চলে গেছে প্রায় ১০টি বসতবাড়ি।

সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরী এলাকার শাহজাহান মোড়ের অনেকেই ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।

ইতোমধ্যে আশপাশের ২০/২৫টি বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাশের নদীতীর রক্ষা বাঁধের ওপরে নির্মিত রানীগ্রাম-রতনকান্দি আঞ্চলিক সড়কটিও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভাঙনে এরই মধ্যে ১০০ থেকে ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, দুই একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু তুলছে প্রভাবশালীরা। এতেই বিপত্তি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডও নির্বিকার। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মিলছে হামলা মামলার হুমকি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এই অঞ্চলে বালু মহাল আছে কিনা, তা তাদের জানা নেই। তবে বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙছে না, নদী ভাঙছে গতিপথ পরিবর্তনের কারণে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিত কর্মকার জানান, ওই একই স্থানে গত বছর ভেঙে গেলে অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছিলো।

স্থায়ী মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কাজ শুরু হয়নি। রোববার ভোর থেকে যমুনা নদীর উল্টো স্রোত পূর্বের ভাঙন স্থানে আঘাত হানে। ফলে সেখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ভাঙন ঠেকাতে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা একই সাথে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিও জানিয়েছেন তারা।।