সিলেট জুড়ে সূর্য্যমুখির বাম্পার ফলন

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অনাবাদি জমিতে এবার সূর্য্যমুখির বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে কৃষকদের মুখে। সফল হয়েছে কৃষি অফিসের উদ্যোগ ও পরামর্শ। জমিতে উৎপাদিত সূর্য্যমুখির নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে উৎসুক জনতা ভীড় করছেন। তেল ফসল সূর্য্যমুখির বাম্পার ফলন ঘরে তোলা হলে অবশ্যই কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবেন। এতে অর্থ উপার্জনে নতুন এক সম্ভাবনার নাম সূর্য্যমুখি চাষ। আর্থিক ভাবে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে জগন্নাথপুর। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে। যা অতীতে ছিল না।

জানা গেছে, জগন্নাথপুরে বছরে দুইবার জমি আবাদ হয়। এর মধ্যে নিচু জমিতে বোরো ও উঁচু জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়। রোপা আমন ধান কাটার পর জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে। এসব বিশাল আয়তনের অনাবাদি জমিগুলো কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার এর প্রাণপন প্রচেষ্টায় কৃষকদের উৎসাহিত করে গত বছর প্রথম বারের মতো জগন্নাথপুরে স্বল্প পরিসরে সূর্য্যমুখি আবাদ করা হয়। এতে লাভবান হওয়ায় এবার সূর্য্যমুখি আবাদে কৃষকরা ঝাপিয়ে পড়েন।

কৃষি অফিস জানায়, এবার জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আমনের অনাবাদি ২০ হেক্টর জমিতে সূর্য্যমুখি আবাদ করেছেন মোট ৬০ জন কৃষক। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কৃষি-উপকরণ বিতরণ করা হয়। চলছে নিয়মিত তদারকি। কৃষি অফিসের প্রচেষ্টা ও কৃষকদের পরিশ্রমে অবশেষে জমিতে সূর্য্যমুখির বাম্পার ফলন হয়েছে। যা সরকারি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ টন। এতে প্রায় ২১ লাখ টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুর্য্যমুখি ফুল ও গাছ থেকে উন্নতমানের কোলেস্টেরলমুক্ত তেল উৎপাদন হয়। এসব তেল বর্তমানে বাজারে প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সূর্য্যমুখি থেকে শিশু খাদ্য, খাওয়ার বাদাম, গবাদিপশুর খাদ্য ও জ্বালানী হয়। জমি রোপনের মাত্র ৪ মাসের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা যায়। ব্যয় কম ও আয় বেশি হওয়ায় সূর্য্যমুখি আবাদে কৃষকদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে।

এ ব্যাপারে ১০ মার্চ বুধবার জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুরে এবার সূর্য্যমুখির বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে অনাবাদি জমিগুলো কাজে লেগেছে। আগে এসব জমিতে এক ফসল হিসেবে শুধু রোপা আমন চাষ হতো। এখন থেকে দুই ফসল হবে। আমনের পর আবাদ হবে সূর্য্যমুখি। আগামী বছর ৫০ হেক্টর জমিতে সূর্য্যমুখি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দেশে ব্যাপক ভাবে সূর্য্যমুখি আবাদ হলে বিদেশ থেকে কোলেস্টেরলমুক্ত তেল আমদানি করা লাগবে না। এতে দেশ আরো এগিয়ে যাবে।