সৌদিতে কিভাবে ছিলাম বলব না : হারিরি

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরি প্রায় তিন সপ্তাহ সৌদি আরবে থাকাকালে সেখানে কী ঘটেছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন না বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবে যা হয়েছে তা নিজের মধ্যেই রাখতে চাই।’ এছাড়া এখনই প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়বেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন হারিরি।

আলজাজিরা জানায়, সম্প্রতি সৌদি আরব সফরকালে নিজের পদত্যাগের ঘোষণার পর দেশে ফিরে তা স্থগিত করেন হারিরি। এরপর সোমবার এক বিবৃতিতে আবারও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি।

সোমবার ফরাসি সংবাদমাধ্যম সি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হারিরি বলেন, হিজবুল্লাহ যদি তার স্থান থেকে সরে না দাঁড়ায় তবে আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিব। এছাড়া ভবিষ্যতে পরামর্শের ভিত্তিতে সরকারের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসতে পারে এবং প্রাথমিক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। পদত্যাগের জন্য সৌদি আরবের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না বলে উল্লেখ করেন হারিরি।

এদিন হিজবুল্লাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইরানের ছায়াতলে দাঁড়িয়ে অস্ত্রের শক্তিতে তারা লেবানন দখল নিতে চাচ্ছে। তারা (হিজবুল্লাহ) একটি দেশের মধ্যে আরেকটি দেশ তৈরির পাঁয়তারা করছে।’ ৪ নভেম্বর সৌদি সফরে গিয়ে আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন হারিরি। এর কারণ হিসেবে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন তিনি।

হারিরি বলেন, গুপ্তহত্যার ভয়েই তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সৌদি আরবের চাপেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তাদের মিত্র হারিরি। হিজবুল্লাহর মুখোমুখি হতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ‘সরিয়ে দিয়েছে’ সৌদি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে লেবাননের প্রসঙ্গ টেনে কাতার অভিযোগ করেছে যে, ছোট দেশগুলোকে সৌদি আরব শুধু খোঁচা দেয়। মধ্যপ্রাচ্যে রিয়াদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে চলমান কূটনৈতিক সংকটের মধ্যে নতুন সংঘাতের জন্ম দিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে কাতার।

কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি লন্ডনে এক গোলটেবিল বৈঠকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের ভঙ্গুর একটি দেশ লেবানন। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে চাপপ্রয়োগ করে দেশটিতে শূন্যতা তৈরি করা এক ধরনের বিকৃত নীতি। তিনি আরও বলেন, ‘বড় এ দেশটি (সৌদি আরব) ছোট একটি দেশকে শাসাচ্ছে- এমনটি কাতারের ক্ষেত্রেও দেখেছি; আমরা এখন এর পুনরাবৃত্তি দেখছি লেবাননে।’

আল-থানি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা ও মিত্রদের ধন্যবাদ যে তারা সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেছেন। যদি শুরুতেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হতো তাহলে আমরা এর ভীতিকর প্রভাব দেখতে পেতাম।’