১৩ বছরের মুন্নার হাতে বাসের স্টিয়ারিং (ভিডিও)

পরিবহন খাতে নৈরাজ্য নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা, তখন ১৩ বছর বয়সী এক শিশুর হাতে যাত্রী বোঝাই বাসের স্টিয়ারিংয়ের মতো পিলে চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা দেখা গেছে।

শিশুটি বেশ বড় দূরত্বে যাত্রী পরিবহন করে থাকে। আর অবলীলায় বাসের মালিক তার হাতে বাসের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। আর গোটা সড়ক ধরেই পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও ছেলেটিকে থামায়নি কেউ।

শিশুটির নাম মুন্না। সে পড়াশোনা করেছে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত। এক বছর ধরেই ঢাকার আজিমপুর থেকে সাভারের নবীনগর রুটে যে ‘গ্রামীণ শুভেচ্ছা’ পরিবহনের বাস চালায়।

নাজমুল নামে এক ব্যক্তি মুন্নার বাস চালানোর ভিডিও ধারণ করে ফেসবুক ওয়ালে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। চলাচলের এক পর্যায়ে মুন্না বাস থামিয়ে নাজমুলের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

গাড়ি চালাতে হলে চালকের লাইনেন্স গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে এই লাইসেন্স নেয়ার সুযোগ নেই। তাই মুন্নার যে কোনো অনুমতিপত্র নেই, সেটি বলাই যায়।

নাজমুল শিশুটির কাছে জানতে চান, ‘ তুমি যে বাসটি চালিয়ে আসলা তোমার তো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। যদি পুলিশ ধরত, তাহলে কী করতা?’-

মুন্নার জবাব আসে, ‘গুলিস্থানের পুলিশ ধরবে না।’

যদিও কেন ধরবে না, সেই কারণটি ব্যাখ্যা করেনি শিশুটি।

‘তাও যদি ধরত তাহলে কী করতা’- পাল্টা এই প্রশ্নে মুন্না বলেন, ‘জানি না।’

মুন্না জানায়, পরিবহন শ্রমিক হিসেবে সে কাজ করছে দেড় বছর ধরে। আর গাড়ি চালানো শিখেছে এক বছর হলো।

গাড়ি চালানো কে শিখিয়েছে মুন্নাকে?

‘ওস্তাদে শিখাইছে। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ভুমারি (ভুরুঙ্গামারি) উপজেলায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, বাসটি নবীনগর, সাভার, কলাবাগান, নিউ মার্কেট হয়ে আজিমপুর যায়।

মুন্নার ভাষ্য, সে বাস চালায় এক বছর ধরেই। কিন্তু সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর আবুল হোসেনের চোখে সেটি ধরা পড়েনি কখনও।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি শুনে আমার কাছে খুবই আশ্চর্য লাগছে। ১৮ বছর বয়সের নিচে কেমন করে একজন বাস নিয়ে রাস্তায় নেমেছে আমি বুঝতে পারছি না। আর তাও সে দীর্ঘ দিন ধরে রাজধানীতে যাতায়াত করে।’

‘আমরা না হয় মফস্বল এরিয়ায় থাকি সেখানে সব সময় দেখার সৌভাগ্য হয় না। তবে বিষয়টি আমি এখন আমার সব অফিসারকে বলে দিচ্ছি। আর এখন থেকে খোঁজ রাখব ছিটে ছোট কারা বসে গাড়ি চালাচ্ছে। কারণ এখন সময় হয়েছে এসব বন্ধ করার।’