১৭০ চুরির ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তি ইংরেজিতে এমএ

চুরি করেছেন ১৭০টি। আর এসব চুরির পেছনে রয়েছেন এক উচ্চশিক্ষিত যুবক। শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঘাটাল শহরের একটি ফ্ল্যাট থেকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এক ‘উচ্চশিক্ষিত’ যুবককে। চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীর বাড়িতে।

পুলিশ অফিসাররা ভেবেছিলেন, সাধারণ চুরির ঘটনার মতো এ চুরিও তেমন একটি ঘটনা। কিন্তু চোরের কাছ থেকে জানতে পারে সে ১৭০টির ও বেশি চুরি করেছে। এটি জানার পর অবাক পুলিশ অফিসাররা। এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে তারা ভাবতে পারেননি।

গ্রেফতার ব্যক্তির নাম সৌমাল্য চৌধুরী। তিনি ইংরেজিতে এমএ পাস করেছেন। ওই যুবকের আদি বাড়ি আসানসোলে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রামে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।

৩ জানুয়ারি দুপুরে ঘাটাল শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে মহাশ্বেতা দে নামে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক কর্মীর তিন লাখ টাকার সোনার গহনা চুরি হয়েছিল। তা নিয়ে অভিযোগও হয়েছিল থানায়।

পুলিশ এ অভিযোগ পেয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে। আর সেই সূত্র ধরেই রোববার পাশকুড়া থানা এলাকা থেকে সৌমাল্যকে গ্রেফতার করে। পরে সৌমাল্যকে ঘাটাল আদালতে তোলা হয়। এবং পাঁচ দিন রিমান্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সৌমাল্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ পাস করেছেন। তিনি খড়গপুরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি করেন। তার বাবা পূর্ত দপ্তরের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী৷

পুলিশ আরও জানায়, এটি সৌমাল্যের প্রথম চুরি নয়। ইতোমধ্যে সে ১৭০টিরও বেশি চুরি করেছে। ২০২১ সালের ৯ জুন হাওড়ার আন্দুল স্টেশন রোডের একটি ফ্ল্যাটে প্রায় ১০ লাখ টাকা সোনার গহনা চুরির ঘটনায় সৌমাল্য ও তার সঙ্গী প্রকাশ শাসমলকে পাশকুড়া থেকে গ্রেফতার করেছিল সাঁকরাইল থানার পুলিশ। তখন রাজ্যবাসী ওই উচ্চশিক্ষিত চোরের বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন। সৌমাল্য পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, চুরি করতে তার ভালো লাগে। আর সে ক্লিপটোম্যানিয়ায় আক্রান্ত।

আসানসোলে থাকাকালীন স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃতির সঙ্গে মিশে চুরির অভিজ্ঞতা হয় সৌমাল্যর৷

পুলিশকে সে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সে ১৭০টি চুরি করেছে।

এ বিষয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ রোগে আক্রান্তরা অর্থের লোভে নয়, এরা চুরি করার নেশায় পড়ে। সৌমাল্য ছোটবেলা থেকে একাকীত্বে ভুগত। চুরি করার পর তার চাকরি চলে যায়। তার পরও সে চুরি করা ছাড়েনি। ২০১৯ সালের পর ধারাবাহিকভাবে সৌমাল্য চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকায় তার মা আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়।