২০ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়েও চালানো হচ্ছে ট্রেন

স্বাধীনতার সময় রেলওয়েতে লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন ছিল ৪৮৬ টি। স্বাধীনতার ৫০ বছরের কাছাকাছি সময়ে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও রেলেরর ইঞ্জিন কমে দাড়িয়েছে ২৭৩টি তে। যার মধ্যে মেয়াদ্দোত্তীর্ণ হয়ে গেছে ৭০ শতাংশেরও বেশী। ৫০-৬০ বছরের পুরনো ইঞ্জিন দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে ট্রেন। ঠিকমত সেবা দিতে পারছে মাত্র ৭৮টি ইঞ্জিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অকার্যকর ইঞ্জিনের কারনে প্রতি বছর বাড়ছে দূর্ঘটনা কমছে রেলের গতি। সংকট সমাধানে নতুন ইঞ্জিন কেনার কথা কথা জানাচ্ছেন রেলমন্ত্রী।

বাশেঁর খুটিঁ বাঁধার সাধারণ জি আই তার দিয়ে ব্রেক জোড়া লাগানো ইঞ্জিনটি বগিগুলো টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওয়াশ ফিডে। হালকা সেই তার ছিড়ে গেছে অনেক আগে, লোহার যে পাতটি চাকাকে চেপে রেখে ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করে সেটিও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে চাকা থেকে সরে গেছে অনেক দূরে।

ইঞ্জিনটির অন্যচাকার ব্রেকও একই তার দিয়ে বাঁধা ছিড়বে যে কোন সময়। প্রায় ৪০ বছর আগে জাপান থেকে কেনা ইঞ্জিনটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে আরও ২০ বছর আগে। সম্প্রতি এই ইঞ্জিনটিকে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণাও করেছে রেলওয়ে।

ইঞ্জিন মেরামতে ওয়ার্কশপে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ১০- ১২ ইঞ্জিন মেরামতের জন্য আনা হয়েছে। তবে যাত্রার পূর্বে নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে দু’একটি ইঞ্জিন থাকলেও, বেশির ভাগ ইজ্ঞিনেরই যান্ত্রিক ত্রুটি ভয়াবহ রকমের। এখনকার মেকানিকরা বলছেন, প্রতিদিনই ২৫-৩০টি ইঞ্জিন মেরামতের জন্য আনা হয় ওয়ার্কশপে, যার অধিকাংশেরই মেয়াদ পেরিয়ে গেছে বহু আগে।

১৯৬৯-৭০ সালে রেলওয়েতে ইঞ্জিন ছিল ৪৮৬টি স্বাধীনতার ৫০ বছরের কাছাকাছি সময়ে এসে তা কমে দাড়িয়েছে ২৭৩টিতে। দীর্ঘদিন নতুন ইঞ্জিন না কেনার ফলে বছর বছর বিকল হয়ে কমে যাচ্ছে লোকোমোটিভের সংখ্যা।

মেকানিকরা বলেন, ‘এই ওয়ার্কশপে পাকিস্তান আমলের ইঞ্জিনও আছে। জোড়া তালি দিয়েই চলছে।’

মেকানিকরা বলছেন, ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা ২০ বছর হলেও রেল বহরে ৪০, ৫০ এমনকি ৬০ বছরেরও পুরনো ইঞ্জিন আছে, যেগুলো বিশ্ব বাজার থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই।

মেয়াদ্দোত্তীর্ণের কারনে রেলের গতি কমার পাশাপাশি, পুরো রেল ব্যাবস্থাকে ঝুকিপূর্ণ করে তুলছে বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক।

তিনি বলেন, ‘এইগুলো অনেক আগেই মিউজিয়ামে চলে যাওয়া উচিত ছিলো।’

ইঞ্জিন সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানালেন রেলমন্ত্রী

গত দশ বছরে দুইবারে ৪৬ টি নতুন ইঞ্জিন যোগ হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতে।