২০ হাজার যাত্রীর ই-ভিসাপ্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, হজ ফ্লাইটে হযবরল দশা!

চলতি বছর নিবন্ধন সম্পন্ন করে হজ পালনের জন্য প্রস্তুত এমন ২০ হাজার হজযাত্রীর ই-ভিসাপ্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হজ করেছেন এমন যাত্রীদের জনপ্রতি দুই হাজার সৌদি রিয়েল পরিশোধ না করলে ই-ভিসার আবেদনপত্র গ্রহণ করছে না সৌদি দূতাবাস।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম এমনটি জানিয়েছেন।

সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, হজের যাবতীয় খরচ মেটানোর জন্য প্রতিটি হজ এজেন্সির সৌদিতে ব্যাংক হিসাব রয়েছে। নির্ধারিত হজ প্যাকেজের বিপরীতে প্রতিটি হজ এজেন্সি হাজিপ্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্ব-স্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। কিন্তু গত সপ্তাহে কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ এজেন্সিগুলোকে জানায়, যে সব এজেন্সির হাজিরা গত দুই বছর হজ পালন করেছেন তাদের জনপ্রতি বাধ্যতামূলক দুই হাজার সৌদি রিয়েল পরিশোধ করতে হবে। এ টাকা পরিশোধ না করে ই-ভিসার জন্য আবেদন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

এ সংখ্যা কেমন জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন হাজীর সংখ্যা কমপক্ষে ১৫-২০ হাজার হবে। বিভিন্ন হজ এজেন্সি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের টিকিট কিনে বসে থাকলেও ই-ভিসা জটিলতার কারণে বহু সংখ্যক যাত্রী হজ পালনে যেতে পারছেন না। ফ্লাইটে নির্ধারিত সংখ্যক যাত্রী না হওয়ায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের চারটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

হাবের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম বাহার এ প্রসঙ্গে বলেন, শুধু বাংলাদেশ বিমানই নয়, সৌদি এয়ারলাইন্সেরও একাধিক ফ্লাইট যাত্রীর অভাবে বাতিল হয়েছে। বিভিন্ন এজেন্সি এখনও সৌদি আরবে বাড়ি-ভাড়া করতে না পারায় ই-ভিসার আবেদন করতে বিলম্ব হচ্ছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাব মহাসচিব জানান, বাড়ি-ভাড়া নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা নেই।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (হজ) মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে যারা হজ করেছেন তাদের ভিসার আবেদনের সঙ্গে দুই হাজার রিয়েল পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে শুনেছি। সৌদি সরকারের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক হজ চুক্তির সময় এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা ছিল না। সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে গত সপ্তাহে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ সিদ্ধান্ত শুধু বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্যই নয়, বিশ্বের সব দেশের হজযাত্রীদের জন্য। তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে রিয়েল পরিশোধ করেই ভিসা নিতে হবে।

হজ প্যাকেজের বাইরে এ বাড়তি টাকা পরিশোধ করলে এজেন্সিগুলোকে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে- এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, গত দুই বছর হজ করেছেন এমন যাত্রীর সংখ্যা খুব বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।

হজ ফ্লাইট বাতিলে হ-য-ব-র-ল দশার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৪২ হাজার হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। রোববার পর্যন্ত ২৩ হাজার ৭৬২ হজযাত্রী সৌদি গেছেন। হজ এজেন্সিগুলো নির্দিষ্ট যাত্রীর নামে টিকিট বুকিং দেন না। ফলে যে সব হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে, ইচ্ছা করলে তাদের পাঠাতে পারেন। বিভিন্ন হজ এজেন্সি একসঙ্গে তাদের হাজীদের পাঠাতে চান বলে ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।-প্রতিবেদন জাগো নিউজের সৌজন্যে প্রকাশিত।