‌’টকশো তে লম্বা লম্বা কথা না বলে হাসপাতালে রোগীর পাশে দাঁড়ান’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম টেলিভিশন টকশোতে অংশগ্রহণকারী রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের অনেক জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ যারা একদিনও কোনো রোগীর পাশে গিয়ে দাঁড়াননি, তারা রোগতত্ত্ব গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ছিলেন; তারা তখন কী করেছিলেন? তারা এখন টেলিভিশনে বসে টকশোতে লম্বা লম্বা কথা বলেন।

কঠোর লকডাউনের মধ্যে বুধবার সরকারি ছুটির দিনে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

আবুল বাশার খুরশীদ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ অনেকে বলছেন, এক বছরে আমরা সক্ষমতা বাড়াইনি। যারা এক দিনও কোনো রোগীর পাশে দাঁড়াননি, তারা রোগতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ছিলেন। তাঁরা তখন কী করেছিলেন? তারা এখন টেলিভিশনে বসে টক শোতে লম্বা লম্বা কথা বলেন। আমাদের পাশে আসেন। আপনার প্রজ্ঞা, জ্ঞান কাজে লাগান। হাসপাতালে চলুন, রোগীর পাশে দাঁড়ান। সেটা না করে ওই নিরাপদ বাক্সের মধ্যে বসে এই টেলিভিশন থেকে ওই টেলিভিশনে গিয়ে নানান ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা বিভ্রান্তিকর এবং দেশের জন্য মঙ্গল হবে না উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনারাও এই সরকারের চাকরি করেছেন, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। আপনি অবসরে গেছেন, কিন্তু দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাননি। আপনি এমন কথা বলতে পারেন না, যে কাজটা আপনি আগে করতেন। তার বিরূপ সমালোচনা করতে পারেন না। এটা গর্হিত অন্যায়। এটা দায়িত্বহীনতার পরিচয়।’

তবে মহাপরিচালক বলেন, তিনি কোনো ব্যক্তিবিশেষকে আক্রান্ত করছেন না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও দেশের মানুষের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশে বলেন, ‘টেলিভিশনের নিরাপদ বাক্স থেকে বেরিয়ে আসুন। অধিদপ্তরে আসুন। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।’

সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদ নিয়েও ক্ষোভ ঝাড়েন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে কিছু কিছু গণমাধ্যম যেভাবে তাদের সমালোচনা করছেন, তা তাদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। পৃথিবীতে এ ধরনের নজির নেই। তিনি আরও বলেন, ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে কেউ না। কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতি সমালোচনার সময় না এবং তাদের সমাজের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান।

প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ মহামারীর শুরু থেকে সমালোচনার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মাস্ককাণ্ড, জেকেজিকাণ্ডের মতো দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ পাওয়া পর মহাপরিচালক পরিবর্তন করে খুরশীদ আলমকে গত বছর এই দায়িত্বে আনা হয়।