‘অন্যায় পরিস্থিতির শিকার হয়েছি’, বললেন বরিশালের ডিসি
বাংলাদেশে বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী তারিক সালমনকে গ্রেফতারের ঘটনায় দু’জন জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করার পর, তাদের একজন বলেছেন, তারা একটি অন্যায় পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
সরকার বলছে, ‘নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করতে পারায়’ বরিশাল ও বরগুনার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এই বদলির ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বরিশালের জেলা প্রশাসক গাজী মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান বলেন, সরকার যে কোন সিদ্ধান্ত আমরা মানতে বাধ্য। তবে বাস্তব পরিস্থিতি হলো আমরা ব্যর্থ হইনি, আমরা একটি অন্যায় পরিস্থিতির শিকার হয়েছি। ”
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যার সাথে আমরা কোনভাবেই সম্পৃক্ত না। কারণ আদালত মামলা আমলে নিয়েছিল অন্যায়ভাবে, জামিন বাতিল হয়েছে অন্যায়ভাবে, ঘটনার ছবি তোলা হয়েছে, পুলিশ যেভাবে ইউএনও-কে নিয়ে গেছে তাও অন্যায় হয়েছে। ”
“এ প্রক্রিয়াগুলোর সাথে তো আমাদের কোন সরাসরি ইনভলভমেন্ট নাই। কিন্তু এ কারণে যদি আমরা শাস্তি পাই – সেটাতো আমরা অন্যায়ের শিকার হলাম” – বলেন মি. সাইফুজ্জামান।
এ বছর স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের একটি শিশুর আঁকা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে কার্ড ছাপানোর জেরে মি সালমনকে আটক করার পর, এ নিয়ে ব্যাপক ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই সরকার আজ এসব ব্যবস্থা নিলো ।
বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমনের ঘটনায় ‘নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ পালন না করতে পারায়’ বরিশাল ও বরগুনার জেলা প্রশাসকদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তাদেরকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফেরত আনা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসক হিসেবে নতুন দুজনের নামও ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে বরগুনার ইউএনওকে গ্রেফতারের ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ায় কোন ব্যত্যয় হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ।
ওই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন এবং এ কমিটিকে আগামী পনের দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলার ইউএনও থাকার সময় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে তিনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছাপান যেটি পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা ছিলো। পরে সে ছবিকে ‘বিকৃত’ অভিযোগ করে বরগুনার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয় বরিশালে।
ওই মামলায় হাজির হওয়ার পর তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এমন ছবি প্রকাশের পর দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয় জনপ্রশাসনে।
-বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন