যে কারণে ইসির বৈঠক ত্যাগ করলেন কমিশনার মাহবুব
অন্য কমিশনাররা তার অধিকার খর্ব করছেন-এমন অভিযোগ করে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বৈঠক ছেড়ে চলে গেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই আমার অধিকার খর্ব করতে পারে না। বাকস্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আমার সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার।’
সোমবার কমিশনের ৩৬তম সভা শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে যান। এর আগে তিনি ৫ দফা দাবিতে বক্তব্য দিতে চাইলে তাকে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়নি বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
মাহবুব তালুকদার সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেও অন্যদের নিয়ে বৈঠক চালিয়ে যান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বৈঠকে কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বেরিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে মাহবুব তালকুদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। যা বলার পরে বলব। এখনও কথা বলার সময় হয়নি।’
বৈঠক সূত্র জানায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ৫ দফা প্রস্তাব দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সুযোগ না পাওয়ায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে তিনি বেরিয়ে যান। তার দাবিরগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনী দায়িত্বে সেনাবাহিনীর কার্যপরিধি নির্ধারণ, সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন, ভোটে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা, ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। তবে লিখিতভাবে এ দফাগুলো ৮ অক্টোবর ইসিকে জানিয়েছিলেন তিনি। সোমবার এ বিষয়ে আবারও বক্তব্য দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
নোট অব ডিসেন্টে তিনি লিখেছেন, নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই আমার অধিকার খর্ব করতে পারে না, বাকস্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আমার সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকার। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করছি এবং প্রতিবাদ স্বরূপ কমিশন সভা বর্জন করছি। কমিশন সভায় তাকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে না দেয়ার বিষয়ে কমিশনারদের ‘অভিন্ন অবস্থান’ তাকে ‘বিস্মিত ও মর্মাহত’ করেছে।
ওই পাঁচ দফা প্রস্তাব কমিশন সভার কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করারও অনুরোধ করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট কমিশনের ৩৫তম সভায় ইভিএমন কেনার বিরোধিতা করে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে সভা বর্জন করেছিলেন মাহবুব তালুকদার। সেই সময় এ খবর প্রকাশ পেলে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর তিনি সংবাদ সম্মেলন করে জানান কেন সভা বর্জন করেছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এ বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ভোটার তালিকায় আলাদা লিঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে বিদ্যমান ভোটার তালিকা বিধিমালায় সংশ্লিষ্ট বিধি ও ফরমে সংশোধনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
বৈঠক শেষে সিইসি ব্রিফ করতে পারেন বলে একজন নির্বাচন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন। গত বৈঠকের দেড় মাস পর আবারও বৈঠক বসল ইসিতে।
সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত ইসিতে মাহবুব তালুদকারকে নেয়া হয় বিএনপির মনোনীত তালিকা থেকে। এরপর থেকে তিনি বর্তমান ইসির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু অন্য কমিশনাররা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তার কোনো সুপারিশ বা প্রতিবাদ কাজে আসছে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন