পারিবারিক কলহের বিবাদে হত্যাকান্ড বেড়েছে সিলেটে
গোঠা সিলেট জুড়ে বেড়েছে হত্যাকন্ড। বৃহত্তর সিলেট বিভাগে দেখা যায়, তুচ্ছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত। এ সবের পিছনে খোঁজ নিয়ে দেখায় বেশি ভাগ খুন করা হচ্ছে পারিবারিক বিবাদ থেকে।
তাছাড়া বিছিন্ন ঘটনায় দেখা যায়-চুরি,ছিনতাই,ডাকাতি বা রাজনৈতিক ঘটনায় খুনও হচ্ছেন অনেক। রাজনৈতিক ভাবে সিলেট জুড়ে যতটি খুনের ঘটনা ঘটেছে বেশির ভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানায়, এর পিছনে পারিবারিক কলহ বা বিবাদের মুল কারণ পরবর্তিতে এগুলো রাজনীতিতে জড়ানো হয়। সম্প্রতি সময়ের সিলেটে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় সিলেটের সচেতন মহলকে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
সচেতন মহল মনে করেন এসব খুনের পেছনের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সামাজিক অবক্ষয়।
সিলেট জুড়ে সম্প্রতি কয়েকটি খুনের ঘটনায় দেখায় সব কিছু পিছনে পারিবারিক কলহ-
৪ মার্চ: সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাঘায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর হাতে লাকী বেগম (২৩) নামক এক গৃহবধূ খুন হন।
৭ মার্চ: সিলেটের বিমানবন্দর থানার খাদিম চা বাগানে এক গৃহবধূকে ইনজেশকন পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই স্বামীর বিরুদ্ধে।
৫ মার্চ : মোগলাবাজারের কুচাই ইউনিয়নের শ্রীরামপুরে স্বামীর ঘুষিতে স্ত্রী মারা যান। শ্রীরামপুর দক্ষিণ পাড়ার নুর মিয়ার ছেলে শাহিদ আহমদ মোগলাবাজার থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে জানান, পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার ঘুষিতে স্ত্রী লাকী আক্তারের মৃত্যু হয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় পৈত্রিক ভিটে ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইয়ের হাতে সৌদি প্রবাসী শামীম আহমদ খুন হন।
৪ ফেব্রুয়ারি: সুনামগঞ্জের ছাতকে পারিবারিক কলহের জেরে বড় ভাইয়ের বল্লমের আঘাতে ছোট ভাই মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি : সকালে জগন্নাথপুর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী’র লাঠির আঘাতে স্বামী খুন হন। নিহত মো. আলেক মিয়া (৬৫) উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের মৃত মাছিম উল্লাহর ছেলে।
৮ ফেব্রুয়ারি: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় দক্ষিণ শাহবাজপুর শাহবাজপুর ইউপির পূর্ব ঘোলসা গ্রামে স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে ছোট ভাইয়ের দায়ের কোপে বড়ভাই খলিল উদ্দিন (৫৫) খুন হয়েছেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি: দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার বিআইডিসি মীরমহল্লায় ভাড়া বাসায় সৎ মা রুবিয়া (৩০), মেয়ে মাহা (৭) ও ছেলে তাহসানকে কুপিয়ে হত্যা করে আহবাব হোসেন আবাদ। ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২৫ ফেব্রুয়ারি: সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় বোনের সংসার বাঁচাতে গিয়ে বোন জামাইর হাতে দিপু বিশ্বাস (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।
এসব হত্যাকান্ডের পিছনে দেখা যায় বেশি ভাগই পরিবারের মধ্যে দেখা দিয়েছে আর্থিক অসচ্ছলতা। আবার দীর্ঘ সময় ঘরে থাকায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তৈরি হয়েছে ঝগড়া-বিবাদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর ওপরের হাত তুলেন অনেকেই।
রাগের বসীভুত হয়ে অনেকে খুন খারাপী করে হত্যা মামলার আসামী হয়ে ফেরারী হয়ে ঘুরছেন,অনেকে আবার জেল কাটছেন। এই সব হত্যা কান্ডের কারণে অনেক পরিবার নিঃশ্ব হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ টেলে দিচ্ছে অন্ধকারের দিকে।
পুলিশ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ বা সচেতন মহলের সমাজ বিশ্লেষকরা মনে করেন, সিলেটে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনার ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রতিটি থানায় পুলিশিং ডেতে সমাজের সাধারণ মানুষদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে প্রচারের মাধ্যমে, পারিবারিক বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য। তাছাড়া পারিবারিক বিষয়গুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এ ব্যাপারে সচেতন রয়েছে।
সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. জেদান আল মুসা বলেন, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়লে নিষ্ঠুরতার মাত্রা বেড়ে যায়। খুনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্যে আমাদের প্রত্যেকটি থানায় বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতাবৃদ্ধি করা হচ্ছে। তাছাড়া এই বিষয়গুলো নিয়ে রেঞ্জের সব অফিসার ও ফোর্স কাজ করছে।
কী কী কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন