বিজ্ঞান বিরোধীরা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ভিক্ষুক বানাতে চায় : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পড়ানোর বিরোধিতাকারী ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়দাতারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভিক্ষুক বানাতে চায়, দেশকে ভিক্ষুক বানাতে চায়। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কি বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়বে না? শুধু কি নামাজ পড়াবে আর নিজে একটি করে মাদ্রাসা তৈরি করবে? কিন্তু আমরা দেশকে ভিক্ষুকের দেশ বানাতে দিতে পারি না।
সোমবার (১৩ মার্চ) মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের আয়োজনে শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পাশের দেশের ছবি দিয়ে, ফটোশপ করে বলা হলো— এইটা আমাদের বাচ্চাদের পড়ানো হচ্ছে। যে বই দেশেই পড়ানো হয় না। একেবারে কদর্য ভাষায় মিথ্যাচার। আপনারা বলেন, মিথ্যাচার কি ইসলাম সমর্থন করে? আপনারা ইসলামের শিক্ষক আপনরাই বলেন। সমর্থন করে না। শিক্ষকদের, মন্ত্রীকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ, হুমকি দেওয়া এর কোনোটাই কি ইসলাম সমর্থন করে? ভুল থাকলে সংশোধন করবো। যেখানে ভুল পেয়েছি সেখানে সংশোধন করেছি, আরো ভুল থাকলে সংশোধন করবো। কমিটিও গঠন করা হয়েছে, কমিটি দেখবে। ২৬টি বই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি করা সহজ কাজ নয়।
শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিখতে দেবে না, তারা তো দেখি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বেশি ব্যবহার করে। ফেসবুকে মিথ্যাচার তারাই তো বেশিই করে। তাহলে প্রযুক্তি নেবো ইসলাম বিরোধী কাজ করার জন্য? মিথ্যাচার করার জন্য? তারা কি ইসলামের সেবক? মানুষ এক সময় হেঁটে, উটের পিঠে চড়ে হজ করতে যেতো, এখন তো আমরা বিমানে যাই। তাহলে কি বিমানে যাওয়া বন্ধ করে দেবো? আমরা মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করে দেবো? পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলে উঠবো না? আমার মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ডাক্তার হবে না? ইঞ্জিনিয়ার, বৈমানিক হবে না? শুধু কি মসজিদে নামাজ পড়াবে? না হলে নিজে আরেকটা মাদ্রাসা খুলবে? তা না হলে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তো লাগবেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যে জ্ঞান তা হঠাৎ করে এসে পড়েছে নাকি শিখতে হয়েছে? আল্লাহ প্রত্যেককে একটি (প্রতেক্যের মগজ) সুপার কম্পিউটার দিয়েছে, সেটি কাজে লাগাবো না? এইটি যে ব্যবহার করবো না, এই কথা যারা বলে, তাদের চেয়ে বড় ইসলামের শত্রু আর হতে পারে না। আল্লাহ প্রথম কথা বলেছেন— পড়ো। আর এরা পড়তেই মানা করে, শিখতেই মানা করে। আমাদের নবীজি কোন হাত পছন্দ করেতেন? দাতার হাত পছন্দ করতেন। আর উনারা যা শেখাবার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞান প্রযুক্তি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে। আমরা বাঙালিকে কখনও ভিক্ষুকের জাতি থাকতে দিতে পারি না। সে জাতিকে এগিয়ে নিতে চাই। যারা আমাদের দেশকে ভিক্ষুক করে রাখতে চায়, যারা দেশের অগ্রগতিকে রুখতে চায়, যারা জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিতে চায় সেরকম লোককে আমরা কখনই ভাবতে পারি না, যে তারা ইসলামের সেবক। কাজেই আপনারা সোচ্চার হবেন। হয়েছেনও সে জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে, বাস্তবায়ন করা অনেক শক্ত। আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ, স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ তেলাওয়াত হোসেন খান এবং শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন