চুয়াডাঙ্গার রেলগেটে আর থামবে না গাড়ী

দীর্ঘ যুগ ধরে যানজটের আখড়া হয়ে জট বাঁধা রয়েছে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের রেলগেট। চলাচল বিড়ম্বনায় সেই কাকডাকা ভোর সকাল থেকে শুরু করে সারাদিন—সারারাত প্রতিনিয়তই পথচারী, বাইসাইকেল, সিএনজি, আলমসাধু, মোটরসাইকেল, লোকাল ও দূর্পাল্লার বাস—ট্রাকসহ ঢাকাগামী পরিবহন যাতায়াতের অন্যতম এবং ব্যস্ততম এই রেলবাজার সড়ক। তবে এই পথ পাড়ি দিতে হলে রেলগেট পার হয়েই যেতে হতো বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের।

জেলার দূর—দূরন্ত থেকে আসা মানুষের যত ব্যস্ততায় থাক না কেন ঠিক রেলগেটে এসে থেমে যেতো বিভিন্ন যানবাহন। এতে করে সারাদিন নানা পেশার মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়াসহ ভোগান্তিতে পড়তে হতো ওই সড়কে চলাচলকারীদের। ট্রেন চলাচলের কারণে প্রতিদিন ৪০ বার রেলগেট ওঠানামা করায় আটকা পড়তে হতো মানুষের।

বিশেষ করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে কোনো ধরনের আশঙ্কাজনক রোগীটানা অ্যাম্বুলেন্সও থেমে যেতে হয় একমাত্র রেলগেটটির কারণে। এতে করে সময় কালক্ষেপণ হওয়ায় ওইসকল রোগীসহ চুয়াডাঙ্গা থেকে রেফার্ড করা রোগীকে ঢাকা কিংবা রাজশাহী যাওয়ার সড়কটি ছিল অন্যতম। শুধুমাত্র এই রেলগেটটির কারণে আশঙ্কাজনক অনেক রোগীকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে এই রেলগেটেই।

এবার চুয়াডাঙ্গাবাসীর সুপ্ত থেকে চাওয়া ১ বছর আগেই রেলওয়ে ওভার পাস নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অবশেষে একনেক প্রকল্পের কাজটি উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১২ আগস্ট) ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলবাজার রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের একাডেমী মোড়ে ভিত্তিপ্রস্তরের মাধ্যমে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরে সকল কার্যক্রম শেষ করে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন চুয়াডাঙ্গা—১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়াদ্দর্ার ছেলুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল—মামুন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল করিম।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়াদ্দর্ার ছেলুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে। এই ফ্লাইওভার নির্মাণ শেষ হলে চুয়াডাঙ্গার দৃশ্য পাল্টে যাবে। কোনো যানবাহনকে রেলগেটে এসে আর থামতে হবে না। এখন সবাই নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।

৭৫ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ১৩টি স্প্যান স্থাপনে ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। যার প্রস্ত হবে ১০.২৫ মিটার। আগামী সপ্তাহ নাগাদ রেল ওভারপাসের সকল কার্যক্রম শুরু হয়ে আগামী ২০২৪ সালের ৩০ জুন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা বনানীর ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনি্জনিয়াস লি: এ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে।