সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আগুনে পুড়ে ছাই অসহায় রুপালির দুগ্ধ গরুসহ শেষ সম্বল
গোয়াল ঘরে রাতে অপরিকল্পিত সাজাল দেওয়ার পাত্র (মশা তাড়ানোর ধোঁয়া) থেকে ঘটেছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আর এতেই পুড়ে গেছে ছায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা মূল্যের একটা দুগ্ধ গরু , খাওয়ার চাল আসবাবপত্রসহ একটি বাড়ির এক তৃতীয়াংশ।
স্বামী ভ্যানচালক আর স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করে তিল তিল করে সংসারটা গুছিয়ে তুলছিল আর অভাবের মধ্যেও সাজানো এই সংসারের সবকিছুই অগ্নিকাণ্ডে নিমিষেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এখন কি রান্না করে তার সন্তানদের মুখে দেবে এমন অবশিষ্ট চাল তার ঘরে নেই এমন কথা দুশ্চিন্তা ভরা কন্ঠে আহাজারি করতে করতে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত রুপালি খাতুন।
গত রবিবার (৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দামোদরকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্নে শেখ নয়ন হোসেনের বোন রুপালি খাতুনের বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দামোদরকাটি প্রাইমারি স্কুলের সামনে অনেক পুরাতন ইট ও বাঁশের ছাউনি দেওয়া রুপালি খাতুনের সংসারের সজ্জিত বিভিন্ন আসবাবপত্র, দেড় লাখ টাকা মূল্যের দুগ্ধ গরু, পোশাক, কাঠ, চাউল, ঘরের ছাউনি পোড়ার দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সবকিছু হারিয়ে বুকফাটা কান্নায় আর্তনাদ করছে ক্ষতিগ্রস্ত রুপালি খাতুন তার স্বামী আব্দুস সালাম, বৃদ্ধ মা তফুরা খাতুন, ও নিকট আত্মীয়-স্বজন। এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন থানার এসআই ফরিদ হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম।
ক্ষতিগ্রস্ত রুপালি খাতুন বলেন, রাতে ঘরে এশার নামাজ পড়ছিলাম এর মাঝে ঘরের সাথে থাকা রান্নাঘর ও গোয়াল ঘরে আগুন দাউদাউ করে জ্বলছিল এলাকার মানুষ ও আমরা মিলে কোনরকম আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে কিন্তু এর মাঝে পুড়ে যায় আমার আয়ের একমাত্র সম্বল দুগ্ধ গরু, রান্নাঘর ও গোয়াল ঘরের সব কিছুই।
অন্যের বাড়িতে কাজ করে এ সম্পদটুকু করেছিলাম কিভাবে এখন সংসার চালাবো ঘরের যা পুড়ে গেছে এগুলো কিভাবে সংস্কার করবো খাওয়ার চাউল পর্যন্ত সংসারে নেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
প্রতিবেশী শেখ রাসেল হোসেন বলেন, এই পরিবারটি এলাকার মধ্যে সবথেকে অসহায় আর এদের গতরাতে আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে। দুগ্ধ গাভীর যে দুধ হতো তা বিক্রি করে তারা সংসার চালাত। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে এখন এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের একার পক্ষে কোনরকম সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
প্রতিবেশী শেখ আশিক হোসেন বলেন, এলাকার সুশীল সমাজের মানুষ জনপ্রতিনিধি দেশে ও প্রবাসে যে ভাইয়েরা আছেন সকলে মিলে এই পরিবারটির সহযোগিতা করলে অবশ্যই এই পরিবারটি আগের মতো স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পারবে।
দামোদরকাটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তাইজেল হোসেন বলেন, অসহায় রুপালির বাড়িতে হঠাৎ আগুন লেগে তার শেষ সম্বল যা ছিল সব পুড়ে গেছে। এজন্য আমরা স্থানীয়ভাবে যথাসম্ভব চেষ্টা করছি এই পরিবারটি পাশে থাকার এবং সকলে যদি এগিয়ে আসে তাহলে অবশ্যই এই পরিবারটি দুশ্চিন্তায় সময় কাটাতে হবে না বরং তারা আগের মতো ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।
কলারোয়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের ফায়ার ফাইটার মামুন হোসেন বলেন, সংবাদ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে আনলেও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত রূপালী খাতুনের রান্নাঘর ও গোয়ালঘর পুড়ে গেছে এবং তার একটা দুগ্ধ গরু পুড়ে মারা গেছে। ধারনা করা হচ্ছে এতে প্রায় তার দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে।
উল্লেখ্য, এই পরিবারটির আয়ের প্রধান উৎস দুগ্ধ গাভী কিন্তু রাতে হঠাৎ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে খাওয়ার চাউল সহ এই সবকিছু পুড়ে নিঃস্ব এই পরিবারটি। যদি কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি সহযোগিতা করতে চান ভুক্তভোগী এই পরিবারটির যোগাযোগ নাম্বার:০১৭৭৭৫০১২৩১
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন