চাঁদপুরে নানীর ভরণ পোষণের বিচার চাইতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার নাতীন
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নানীর ভরণ পোষণের বিচার চাইতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে তরুণী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হাজীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগী।
যৌন হয়রানির শিকার তরুণী মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে হাজীগঞ্জে একটি চাইনিজ হোটেলের হলরুমে প্রেসবিফ্রিংয়ে সংবাদকর্মীদের জানান, আমার নানী রওশনআরা’কে মামা জামাল হোসেন ভরণ না দেয়ায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার তদন্ত দেয়া হয়, হাটিলা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম মুজিবুর রহমানকে। পহেলা নভেম্বর নানী, তার নাতীন কচুয়া উপজেলার কালিয়াপাড়া গ্রামের সুমাইয়া, মামী নাজমা আক্তারসহ চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চাইতে যায়। ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম মজিবুর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল পাটওয়ারী সুমাইয়াকে পাশের কক্ষে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেন সুমাইয়া। এসময় আমার মামী নাজমা আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও আমাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
প্রেসে ব্রিফ্রিয়ে সুমাইয়া সাংবাদিকদের আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম মজিবুর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল পাটওয়ারী আমাকে ঝাঁপড়িয়ে ধরে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে আঁছড়িয়ে আমার জামা ছিঁড়ে ফেলে আমার ডাক চিৎকারে আমার নানী দৌঁড়ে এসে দরজার কড়া নাড়লে তারা ২ জন অফিস থেকে বের হয়ে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গাড়ীতে করে চলে যায়।
সুমাইয়ার নানী রওশন আরা ঘটনার বিচার চাইতে গিয়ে বলেন, আমি গরীব মানুষ। আমার ছেলে আমার ভরণ পোষণ না করায় আমি আদালতে মামলা করি। সেই মামলার তদন্ত দেয়া হয়, ইউপি চেয়ারম্যানকে সেখানে বিচারের জন্য কয়েকবার গেলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম মজিবুর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল পাটওয়ারী আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি টাকা না দিতে পারায় আমার মামলার তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়নি।
রওশন আরা বলেন, আমি গরীব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাবো। চেয়ারম্যানতো আমার নিজের লোক। আমার ব্যাপারে সবই জানে। তারপরেও রাসেল পাটওয়ারী ও চেয়ারম্যান আমার কাছে টাকা চাচ্ছে। আমি আমার নাতিন’সহ তার অফিসে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম মজিবুর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল পাটওয়ারী আমার নাতিনের সাথে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেছে। তারা আমার নাতিনের গায়ের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে খামছি দেয়। আমি ইউএনও অফিসে, থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পরে মঙ্গলবার আদালতে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পন্ন ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা। আমার পরিষদে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল পাটওয়ারী বলেন, ওই দিন আমি হাজীগঞ্জেই ছিলামনা। যদি আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকি তাহলে আমাকে যে, সাজা দেবে আমি মাতা পেতে নেবো।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানায় ভূক্তভোগি তরুণীর পক্ষে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার বিষয়টি শুনানির দিন ধার্য ছিল। আমি সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। শুনানিতে অভিযোগ দায়ের কারীরা কেউ উপস্থিত হয়নি। আমি ফোনেও তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা পরেও কেউ আসেনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন