চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের এক দিনে দুই গৃহবধূর আত্মহত্যা

হাজীগঞ্জে মিতু আক্তার (২১) নামের এক সেনা সদস্যের স্ত্রী ও শামীমা বেগম (৩৮) নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের সিহিরচোঁ গ্রামে ও রাজারগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামে এ আত্মহননের ঘটনা ঘটে।

আত্মহননকারী মিতু আক্তার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের সিহিরচোঁ গ্রামের মালের বাড়ির সেনা সদস্য আবু সাঈদ মাসুমের স্ত্রী এবং অপর আত্মহননকারী শামীমা বেগম রাজারাগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামের হাজী বাড়ির বাহরাইন প্রবাসী মো. ফারুক মোল্লার স্ত্রী। পুলিশ মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

মিতুর বাবার বাড়ির লোকজন দাবি করেন মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ হিসাবে তারা বলেন, মিতুর গলায় ওড়না পেঁচানো। যদি সে ফাঁস দিতো, তাহলে ঝুলে থাকতো এবং পা মাটি বা খাটে স্পর্শ করতো না। কিন্তু তার পা দুইটি হাঁটু ভাজ করা অবস্থায় খাটের সাথে লাগানো রয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই মিতুর সাথে তার শশুর বাড়ির লোকজনের সম্পর্ক ভালো ছিলো না।

মিতুর শশুর আনোয়ার উল্যাহ্ জানান, তার ছেলে ফোন করে বলছে আপনারা ভাত খেয়ে নেন, আমার বাড়িতে আসতে দেরী হবে। তারপর বউসহ (মিতু) আমরা এক সাথে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়েছি। পরে ছেলে বাড়িতে এসে তার রুমের লাইট জ¦ালিয়ে দেখে এই অবস্থা (মিতুর গলায় ফাঁস)। তখন সে ডাক-চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তিনি মিতুর বাবার বাড়ির অভিযোগ অস্বীকার করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মিতুর মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। জানা গেছে, আবু সাঈদ মাসুম সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। তিনি ছুটিতে এসে গত এক সপ্তাহ যাবৎ বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে মিতু আক্তারের সাথে তার বিয়ে হয়।

অপর দিকে আত্মহননকারী শামীমা বেগমের ছেলে মো. সিয়াম জানান, তার বাবা বাহরাইন প্রবাসী এবং বর্তমানে তিনি বাহরাইনে আছেন। তারা এক ভাই ও এক বোন। শুক্রবার রাতে তারা ভাই-বোন ও মাসহ এক সাথে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এর মধ্যে মা ও তার ছোটবোন এক সাথে ঘুমায়।

তিনি বলেন, শনিবার সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে মাকে দেখতে না পেয়ে আমার বোন আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে। এরপর আমি আমাদের বসতঘরের পূর্ব দিকের কক্ষে গিয়ে দেখি মা গলায় ওড়না ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রয়েছেন। তাৎখনিক আমি ডাক-চিৎকার দিনে বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে আসে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
দুই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, মিতু আক্তার ও শামীমা বেগমের মরদেহ তাদের নিজ নিজ বসতঘর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুইজনের মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।