রংপুরের পীরগঞ্জে হস্তান্তরের আগেই ব্রীজে ফাঁটল!
রংপুরের পীরগঞ্জে হস্তান্তরের আগেই ব্রীজে ফাটল দেখায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধুলগাড়ী গ্রামে আঁখিরা নদীর মরাখালের উপর সদ্য নির্মিত ব্রীজে।
রোববার (২৭ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালযের অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থে বক্স কালভার্ট নামে ওই ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। পাশ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার ‘তাজুল ইসলাম ট্রেডার্স’ নামের ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কার্যাদেশ পায়।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রীজ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হলেও সংযোগ সড়কের কাজ বাকি ছিল। ব্রীজের দুই দিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্কাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি ফেলতে থাকে। এ সময়ে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ব্রীজের উইং ওয়াল, গার্ডার, টপ ¯øাব ও এবাটমেন্টে ফাটল দেখতে পেয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। ঠিকাদার পক্ষের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তড়িগড়ি করে ভাঙ্গা ও ফাটলের স্থানে সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর প্রতিবাদের কারণে তা করতে পারেনি।
ধুলগাড়ি গ্রামে বসবাসরত মিজানুর রহমান, সাজু মিয়া, রুবেল, ফজল, আজিজুল ইসলাম, রাকিব মিয়া, আলম মিয়াসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে গ্রামবাসী বর্ণিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছিল। কুমারগাড়ী, খষ্টি, আলমপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৫ সহস্রাধিক মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে এবং ধুলগাড়ী গ্রামের মানুষের শত শত একর জমির ফসল পরিবহণের দুর্ভোগ লাঘবে ব্রীজ নির্মাণ জরুরী ছিল। নদীর প্রস্থানুযায়ী ৭০/৮০ফিট ব্রীজ নির্মাণ না করে নদীর মাঝখানে ৩৮ফিট দৈর্ঘ্য ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ অর্ধ কিলোমিটার দুরত্বে পুর্ব ও পশ্চিম দিকে ২টি ব্রীজ রয়েছে যার দৈর্ঘ্য ৭০ থেকে ৮০ ফুটের উপরে। এত ছোট ব্রীজে নদীর গতিপথসহ সংযোগ সড়কের মেয়াদকাল নিয়ে এলাকাবাসী সংসয় প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। শুধু তাই নয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্রীজ নির্মাণের শুরু থেকে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিল। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্রীজটি নির্মাণ কাজ শেষ করে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার তাজুল ইসলাম জানান, কোন নিন্মমান সামগ্রী ব্যবহৃত হয়নি, সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে অদক্ষ ভেকু চালকের কারণে ভেকুর ধাক্কায় ব্রীজের সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঠিকাদারের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, সংযোগ সড়কের উত্তর দিকের মাটি সরিয়ে দক্ষিন দিকে চাপ দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন