সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আচমকা ঝড়ে লন্ডভন্ড অর্ধশত পরিবার, ব্যাপক ক্ষতি
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের পল্লীতে আচমকা ঝড়ে লন্ডভণ্ড হয়ে গেছে অর্ধশত পরিবারের কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি। মানবেতর জীবন যাপন করছে শিশু ও বৃদ্ধসহ সহস্রাধিক মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দহা গ্রামে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও আচমকা ঝড়ে এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কাঁচা-পাকা ঘর বাড়ি ভেঙে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে।
উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দহা গ্রামে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৮ টায় আকর্ষিক ঝড়ে ও টানা বৃষ্টিতে অর্ধশত পরিবারের কাঁচা-পাকা বাড়ি ঘর ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
এলাকা বাসীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার সহায়-সম্পদ। উপজেলার সীমান্তবর্তী কালিন্দী নদীর পাশে এই তান্ডব চালিয়েছে শরতের ঝড়ো হাওয়া। এই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়েস এর প্রভাবে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল হাড়দ্দহা সহ ১২ গ্রাম।
সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন, ১৯ টি ঘরবাড়ি পুরো ক্ষতিগ্রস্ত ও ৩০ টার অধিক ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সাথে টানা বৃষ্টিতে সুপ্রিয় খাবার পানির সংকট ও শত শত বিঘা মৎস্যঘের পানির তলে তলিয়ে মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
সরেজমিন বুধবার হাড়দ্দহা গ্রামে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সবুর, সজীব হোসেন, মাছিদুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গতকাল রাত ৯ টার দিকে হঠাৎ ৩/৪ মিনিটের আচমকা একটি ঝড়ে লন্ড-ভন্ড যায় গ্রামের একাংশ।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন গতকাল রাত থেকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কেও অসহায় এই মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ভোট আসলে জনপ্রতিনিধিরা অনেক কিছুই বলে তবে ভোটের পর আর কেউ পাশে থাকে না।
এলাকার যুব সংঘের উদ্যোগে দুপুরে অসহায়দের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইকবাল আহমেদ জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হয়েছে। তার ভিতরে ১৫% বীজতলা পুরোপুরি পানির তলে তলিয়ে গেছে, ৬০% বীজতলা আংশিক তলিয়ে গেছে আর বাকি ২৫% বীজতলা এখনো পর্যন্ত শুকনা আছে। কিন্তু এই বৃষ্টিপাত যদি অব্যাহত থাকে তাহলে পুরোপুরি পানির তলে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং সেখানে কিছু শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাউল বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে জানতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি, এজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন