সৌদির বিরুদ্ধে লেবাননের যুদ্ধ ঘোষণা

সৌদি আরবের দাবি লেবানন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গ্রুপের আগ্রাসনের কারণেই লেবানন এমনটা করছে বলে উল্লেখ করেছে রিয়াদ। এমন ঘোষণার ফলে লেবাননে অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরা।

শনিবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী এবং সৌদির মিত্র সাদ হারিরি রিয়াদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর থেকেই লেবাননের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। পদত্যাগের আগে ইরান এবং এর মিত্র হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন সাদ হারিরি।

এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় ইরান এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর চাপের মুখে পড়েছে লেবানন। সৌদির উপসাগরীয়বিষয়কমন্ত্রী থামের আল সাবহান এ সম্পর্কে বলেন, লেবানন সরকার সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে তিনি হিজবুল্লাহর আগ্রাসনকে দায়ী করেছেন।

আল অ্যারাবিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি সাবহান বলেন, সৌদি আরবের জন্য হুমকি স্বরূপ এমন সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হিজবুল্লাহ ।

তিনি বলেন, লেবাননের লোকজনকে বেছে নিতে হবে যে তারা শান্তিতে থাকবে নাকি হিজবুল্লাহর সঙ্গে থাকবে। তবে বেইরুতের বিরুদ্ধে রিয়াদ কী পদক্ষেপ নেবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি সাবহান।

যুদ্ধ ঘোষণার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে লেবাননের তরফ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে আল জাজিরার এক খবরে বলা হয়েছে, সৌদির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আসা এমন কঠিন ভাষাকে বিশ্লেষকরা নজিরবিহীন হিসেবে দেখছেন।

হারির একজন সুন্নি রাজনীতিবিদ এবং সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের মিত্র। তিনি রিয়াদে বসেই কেন পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

তার এমন সিদ্ধান্তে লেবাননের জোট সরকারের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। কারণ সরকারে হিজবুল্লাহ বেশ কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন।

রাজনীতি বিশ্লেষক খালদুন এল চারিফ আল জাজিরাকে বলেন, লেবানন দুটি সমান দলে বিভক্ত। একটি ইরানপন্থি এবং অপরটি সৌদিপন্থি। তাই আমাদের একটি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

লেবাননের আইনমন্ত্রী সেলিম জ্রেইসাতি বলেন, হারির সৌদি থেকে না ফেরা পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের প্রক্রিয়াটি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট আমাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হারিরি নিজে আমাদের কাছে তার পদত্যাগের বিষয়টি না জানানো পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব না।

তবে হারিরির পরিবর্তে যোগ্য প্রধানমন্ত্রী খুঁজে বের করাটা এখন লেবাননের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে লেবাননের জনগণ বেশ উদ্বিগ্ন। কী হচ্ছে সে বিষয়ে তারা চিন্তিত।