এফআর টাওয়ারের বৈধ কাগজ পায়নি তদন্ত কমিটি

এফ আর টাওয়ারের উনিশ থেকে বাইশ তলা পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে, রাজউকের অনুমোদন আছে দাবি করলেও তদন্ত কমিটি কোনো বৈধ কাগজ পায়নি। রাজউকের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে নকশার সঙ্গে মূল ভবনের অসঙ্গতিও। নেই বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অনুমতি।

ভবনটি আপাতত ব্যবহারের অযোগ্য বলেও জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় শুধু মালিক নয়, রাজউকও এর দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে বারোটা। রাজধানীর বনানীতে সুউচ্চ বাণিজ্যিক ভবনে ভয়াবহ আগুন চমকে দেয় পুরো জাতিকে। সাত ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিভলেও পুড়ে ছাই সাত থেকে ২২ তলা। প্রাণহানি হয় ২৬ জনের।

অগ্নিকাণ্ডের পর একে একে বেড়িয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। ২৩ তলা এই ভবনের অনুমতি ছিল ১৮ তলার। ঘটনার পাঁচ দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দেয় রাজউকের কমিটি। অতিরিক্ত পাঁচ তলা গড়ার অনুমতি ছিল – মালিক এমনটা দাবি করলেও কোনো বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। নির্মাণের মূল নকশার সাথে মিলেছে বিস্তর ফারাক।

রাজউকের তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক মেহেদী হাসান আনসারী বলেন, রাজউকের কাছ থেকে যে নকশা পেয়েছি সেখানে আছে আঠারো তলার ভবন। মূলত আবাসিক কাজে ব্যবহারের জন্য ভবনটি নির্মিত। মূল নকশায় যেখানে সিঁড়ি ও লিফট দেখানো আছে, আসল ভবনে তা একদম অন্য জায়গায়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ায় আপাতত আর ব্যবহারের যোগ্য নয়।

অধ্যাপক মেহেদী হাসান আনসারী বলেন, আগুনের কারণে আট-নয়-দশ তলায় কিছু কলামে কিছু ফাটল দেখা দিয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল শর্ট সার্কিটের কারণে হয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে, তার মানে ইলেকট্রিক্যাল লাইনেও সমস্যা আছে। আমরা পাঁচ মাসের একটা সময় বেঁধে দিয়েছি, এরমধ্যে ভবনের অবকাঠামোগত সমস্যা, অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়, এবং বৈদ্যুতিক ত্রুটি সারিয়ে সংস্কার করে রাজউকের কাছে রিপোর্ট দিতে হবে ভবন মালিককে।

এক্ষেত্রে কেবল মালিকের ওপর দায় চাপিয়ে রাজউক পার পেতে পারে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, এই ভবনটির নির্মাণকাজ যে সময় হয়েছে, সেই সময় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যারা ছিলেন তারা এবং এ ভবনের মালিক আপস করে এ কাজটি করেছেন। শাস্তি যদি দিতে হয়, দু’পক্ষেরই শাস্তি দিতে হবে।

তবে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সকলকেই সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।