কাশ্মীরে ভারতের সামরিক রোবট

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোকাবেলায় এবার সামরিক রোবট মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাতে হিন্দুস্থান টাইমস জানায়, সেনাবাহিনীর তরফ থেকে কাশ্মীরের জন্য চাওয়া ৫৪৪টি রোবটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রোবট সেনা জওয়ানদের মতো নিরাপত্তা নজরদারি এবং অভিযানের কাজ করবে। সশস্ত্র হামলা বা পাথর নিক্ষেপে সেনাদের হতাহত হতে হয় বলে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রোবটের কথা চিন্তা করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়াও রাষ্ট্রীয় রাইফেলস রয়েছে যারা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মুখোমুখি হচ্ছে। এরকম অবস্থায় রোবট রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের খুব সহায়ক হবে। ৮ মাস ধরে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিওর (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন) তত্ত্বাবধানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবট উন্নয়ন কেন্দ্র সিআইআইআর (সেন্টার ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রোবটিকস) ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য রোবট তৈরির ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

বছরের শুরুর দিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, দলবদ্ধভাবে কাজ করতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সামরিক রোবট তৈরি করছে ভারত। মানবাধিকার সংস্থা এবং রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর ক্রমেই ভারত-পাকিস্তানের সমরাস্ত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালের পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অন্তত পাঁচ লাখ কাশ্মীরি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও ১০ লাখের মতো।

‘আফজাল গুরুর ফাঁসি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক’ শীর্ষক নিবন্ধে বিশ্বখ্যাত বুদ্ধিজীবী অরুন্ধতী রায় কাশ্মীর সম্পর্কে ২০১৩ সালে বলেছিলেন, ‘আবু গারিবের আদলে এখানকার সেনাঘাঁটি ও নির্যাতন কেন্দ্রগুলোই কাশ্মীরিদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বার্তাবাহক।

আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের দাবিতে সংগ্রামরত কাশ্মীরিদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজার মুক্তিকামীকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ হাজারকে গুম করা হয়েছে। নির্যাতিত হয়েছে আরও অন্তত এক লাখ লোক।’