ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বাড়ছে মোবাইল ব্যবহারে!

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়ার কারণে তার রেডিয়েশনের প্রভাবে মারাত্মক খারাপ প্রভাব পরছে মস্তিষ্কের ভেতরে। ভিষণ মাত্রায় ক্ষতি হচ্ছে নিউরন, ব্রেন সেল এবং এনজাইম সিস্টেমের। ফলে একাধিক মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যাচ্ছে বেড়ে। আরশোলার উপর করা এই গবেষাণায় তিরুবন্তপুরম কলেজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা লক্ষ করেছিলেন মোবাইল ফোন থেকে নির্গত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কারণে আরশোলার দেহের ভেতরে এনজাইম সিস্টেম এবং হেমাটোলজিকাল প্রফাইলে মারাত্মক পরিবর্তন আসছে, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।

প্রসঙ্গত, আরশোলার দেহের মতো আমাদের শরীরের ভেতরেও একই রকমের এনজাইম সিস্টেম রয়েছে, যা বেশি মাত্রায় মোবাইল ব্যবহারের কারণে ধীরে ধীরে ঠিক মতো কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে ক্যান্সারের মতো মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে উপকারি প্রোটিনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে শরীর এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও কমতে শুরু করে। একটি খারাপ অভ্যাসের কারণেও আজকের ডেটে মোবাইল ফোনের ব্যবহার চিকিৎসকদের কাছে একটা পাবলিক হেলথ কনর্সান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১.ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বাড়ছে:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে মাথার কাছে ফোন রেখে শুলে শরীরে রেডিয়েশনের প্রভাবে কোষেদের বিকাশে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ফলে নানাবিধ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর আগে একদল অষ্ট্রেলিয়ান গবেষক এই বিষয়ে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাদে দেখা গেছে শরীরের কাছাকাছি বেশি সময় মোবাইল ফোন রাখলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যায়। ফলে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

২.আজ থেকেই মোবাইলের অ্যালার্ম ব্যবহার বন্ধ করুন:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে যখন অ্যালার্ম সেট করার পর থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা তা অফ করছি, ফোন থেকে “রেডিও ট্রান্সমিশন” হতে থাকে। সহজ কথায় মোবাইলের শরীর থেকে অদৃশ্য তরঙ্গ বেরতে থাকে, যার প্রভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এবার ভাবুন তো ফোনটা মাথার কাছে রেখে শুলে কী হতে পারে!

৩.সারা রাত ফোন চার্জ দেওয়া চলবে না:
যদি মাঝ রাতে পুড়ে মরতে না চান, তাহলে মাথার কাছে ফোন রেখে চার্জ দেওয়া বন্ধ করুন। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘুমিয়ে পরার কারণে সারা রাত ধরে ফোন চার্জ হতে থাকে। যে কারণে মরাত্মক কিছু বিপদ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন ধরুন, বেশি মাত্রায় মোবাইল ফোন চার্জ হয়ে গেলে যে কোনও সময় ব্যাটারি বাস্ট করার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সাবধান বন্ধু, সাবধান!

৪.ঘুমানোর সময় তাহলে কোথায় ফোনটা রাখা উচিত?
দুটো কাজ করতে পারেন। এক, ফোনটা বন্ধ করে ডাইনিং টেবিলে রেখা নিশ্চিন্তে বেড রুমে নিদ্রা যেতে পারেন। ফোন বন্ধ করতে হবে? আরে মশাই ঘুমনোর সময় তো আর হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক করেন না। তাহলে ফোন বন্ধ রাখতে ক্ষতি কী! আর যদি একান্তই ফোনটা বন্ধ করতে আত্মা সায় না দেয়, তাহলে ফোনটা অন রেখেই দূরের কোনও ঘরে চালান করে দিন। এমনটা করলে অন্তত রেডিয়েশনের বিষ গিলে মরতে হবে না কম বয়সে। প্রসঙ্গত, গবেষকরা লক্ষ করে দেখেছেন ঘুমনোর সময় শরীর থেকে মোবাইল ফোনটিকে যদি কম করে ৩ ফুট দুরত্বে রাখা যায়, তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে।

৫. ফোনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে বাঁচতে আরও কিছু উপায়:
এক্ষেত্রে যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখাটা একান্ত প্রয়োজন, তা হল-

ক) ফোনে কথা বলা কমান। দীর্ঘ ফোন কল এড়ানোর চেষ্টা করুন। আর যদি একান্ত এমনটা সম্ভব না হয়, তাহলে কয়েক মিনিট পর পর এক কান থেকে অন্য কানে ফোনটা নেবেন। এক ভাবে, এক কানে দিয়ে ফোনে কথা বলবেন না।

খ) সম্ভব হলে ফোনে কথা বলার সময় হেড ফোন ব্যবহার করুন। এমনটা করলে ফোনের রেডিয়েশনের প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।

গ) সিগনাল যেখানে ভালভাবে আসছে না। সেখানে ভুলেও ফোন কল রিসিভ করবেন না। এমনটা করলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ সিগনাল দুর্বল থাকার সময় ফোন থেকে বেরনো রেডিও ওয়েভের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ব্রেনের উপর খুব খারাপ প্রভাব পরে।

ঘ) প্যান্টের পকেটে অথবা বুক পকেটে ভুলেও ফোন রাখবেন না। এতে শরীরের একাধিক অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।