ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হচ্ছে শবে কদর

আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। এই রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়। ইসলাম ধর্মমতে এই রাতের তাৎপর্য ও মর্যাদা অনেক বেশি। কোরআনের ভাষায় এই রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাতটি উদযাপিত হচ্ছে।

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মাগরিবের পর থেকেই শুরু হয়েছে শবে কদরের আনুষ্ঠানিকতা। চলবে সারারাত। ফজরের নামাজের পর মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই আনুষ্ঠানিকতা।

যেসব মসজিদে খতমে তারাবি হচ্ছে সেখানে আজ খতম হবে।খতমে কোরআনকে কেন্দ্র করে মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদে ওয়াজ মাহফিলও অনুষ্ঠিত হবে।

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

শবে কদরের তাৎপর্য

রমজানের শেষ দশকের যেকোনো বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর হতে পারে। তবে হাদিস শরিফের বর্ণনা অনুযায়ী ২৬ রমজান দিবাগত রাতটি পবিত্র লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। মহিমান্বিত এ রাতের ফজিলতের সঙ্গে অন্য কোনো রাতের তুলনা হয় না। লাইলাতুল কদর বা শবে কদর অর্থ সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ রাত। বছরের যে কটি দিন ও রাত বিশেষভাবে মহিমান্বিত, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ এই শবে কদর। পবিত্র রমজানের এ রাতে লাওহে মাহফুজ থেকে নিম্ন আকাশে মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়। কোরআন নাজিলের মাস হিসেবে রমজান যেমন বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত, তেমনি কোরআন নাজিলের কারণেই শবে কদর অতি ফজিলত ও তাৎপর্য বহন করে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি জান লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন।’

অসংখ্য হাদিসে শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদরে ঈমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় ইবাদত করে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) পুরো রমজান, বিশেষত রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদরের অন্বেষায় ব্যাকুল হয়ে ওঠতেন। পরিবার-পরিজন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও লাইলাতুল কদর তালাশ করতে বলতেন।

লাইলাতুল কদর উম্মতে মোহাম্মদির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। আর কোনো নবীর উম্মতকে এ ধরনের ফজিলতপূর্ণ রাত বা দিন দান করা হয়নি। আগের যুগের উম্মতেরা অনেক আয়ু পেতেন। সে জন্য তারা অনেকদিন ইবাদত করারও সুযোগ পেতেন। সে তুলনায় উম্মতে মোহাম্মদীর আয়ু নিতান্তই কম। এজন্য আল্লাহতায়ালা তার বিশেষ দয়ায় মহানবীর (সা.) উম্মতকে মহিমান্বিত এ রাত দান করেছেন। যারা এ রাতে ইবাদত করে কাটাবেন তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। এ রাতে নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত নেই। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল, দান-সদকা সবই এ রাতে করা যায়। আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে যেকোনো ইবাদত করলে অভাবনীয় প্রতিদান পাওয়া যাবে।