ফরিদপুরে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে অর্ধশতাধিক পরিবার

ওজোপাডিকোর উদাসিনতায় প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের নিচে বসবাসকারি এই পরিবারগুলোর উপর যেকোনো মুহূর্তে নেমে আসতে পারে মহাদূর্যোগ। প্রায় একবছর হলো বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় পরিবারগুলো অসহায়ভাবে দিনযাপন করছে।

জানা যায়, ফরিদপুর শহরের বাইপাস সড়কের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশ দিয়ে ওজোপাডিকোর ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চলে গেছে। এই লাইনের মাঝ বরাবর ব্রাহ্মণকান্দা এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ওই বসতঘরগুলোর উপর দিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে পরিবারগুলো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এই বসতির টিনের ঘরগুলোর কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাত্র আধা হাত উপর দিয়ে চলে গেছে। বাড়িঘরের উপর দিয়ে ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন টানা কোনোভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। এটা ওই বাড়িঘরে বসবাসকারীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

এ লাইন নেয়ার অনেক আগে থেকেই এখানে পরিবারগুলো বসবাস করে আসছে। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে পরিবারগুলো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি সরিয়ে স্থাপনের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও কেউ কোনো কথাই শোনেনি।

যথেষ্ঠ পরিমাণে জায়গা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নেয়ার সময় পরিবারগুলোর অনুরোধ উপক্ষো করে ওজোপাডিকো লাইন টেনে যায়। এই পরিবারগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি তারা কোনোভাবেই আমলেতো নেয়ইনি উল্টো পানির মধ্যে দিয়ে পিলার স্থাপন করে লাইন টেনে নিয়ে গেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। যেকোনো মুহূর্তে পানিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হয়ে পুরো এলাকা মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়তে পারে।

ওই এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী শেখ বাশার জানান, আমার বসতঘরের উপর দিয়ে ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন চলে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। বিদ্যুৎ লাইনের কারণে ঘরবাড়ি মেরামতও করতে পারছি না। ঝড়ো বাতাস হলে পরিবার পরিজন নিয়ে শংকার মধ্যে থাকি। এছাড়া লাইনের পিলার বাসার পাশে খালের মধ্যে থাকায় পানিতে নামতেও আমরা ভয় পাই। লাইনটি সরানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন করা হলেও দীর্ঘদিন যাবৎ তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে ওজোপাডিকো ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিপণন) মো. মুরশীদ আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন সরানোর ব্যাপারে ব্রাহ্মণকান্দা এলাকাবাসীর লিখিত আবেদনটি আমলে নিয়ে সুপারিশসহ খুলনায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ওজোপাডিকো খুলনা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল ইসলাম (পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল, ফরিদপুর) জানান, এলাকাবাসীর লিখিত আবেদনটি আমি পেয়েছি। ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সরানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। এটা সম্পূর্ণভাবে সদর দফতরের এখতিয়ারে। আবেদনটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সুপারিশ করে সদর দফতরে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।